হজরত মহম্মদকে নিয়ে নুপুর শর্মার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ শুক্রবারের মত শনিবারও ভঙ্গ করল কাশ্মীরের শান্তি। চেনাব উপত্যকায় দ্বিতীয় দিনও বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। রাজৌরি এবং পুঞ্চের যে বাসিন্দারা বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে সমর্থন করেছিল, তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতে বনধও পালন হল উপত্যকায়।
জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ার এবং পার্শ্ববর্তী ডোডা জেলার ভাদেরওয়াহ শহরে লাগাতার কার্ফু চলছে। জারি আছে ১৪৪ ধারা। চার বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ দেখলেই গ্রেফতারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রামবান এবং ডোডা জেলার অবশিষ্ট অংশেও জারি রয়েছে কার্ফু। দুই সম্প্রদায়ের লোকেরা পরস্পরের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করায় ব্যাহত হয়েছে শান্তি।
তবে, প্রশাসন সতর্ক থাকায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শুধু রাজৌরি সীমান্ত এবং পুঞ্চ জেলার লোকেরা বনধ পালন করেছে। রাজৌরি এলাকায় বনধ ডেকেছিল মুসলিম সংগঠনগুলো। আর পুঞ্চে হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা বনধ ডেকেছিলেন। এর মধ্যে একদল নুপুর শর্মা এবং তাঁর সমর্থকদের গ্রেফতারির দাবিতে বনধ পালন করেছেন। অপরদল, নুপুর শর্মার সামনে হিন্দু দেবতাদের অপমানসূচক কথা বলায় বনধ ডেকেছিলেন।
সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ভাদেরওয়াহ শহরে। এখানে এক সম্প্রদায়ের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নূপুর শর্মাকে সমর্থন করার অভিযোগে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা (বিজেওয়াইএম) এর সাধারণ সম্পাদক আশিস শর্মা-সহ তিন জনের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল।
এই বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করে আয়োজিত সভায় একজন বক্তা এলাকার হিন্দুদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন। যার প্রেক্ষিতে ওই বক্তা ও সভার আয়োজকদের গ্রেফতারের দাবি ওঠে। শুধু তাই নয়, সভার ওই ব্যক্তির মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে, হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ছাত্র বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে কিছু মন্তব্য-সহ হজরত মহম্মদ ও তাঁর স্ত্রী আয়েশার একটি ছবি পোস্ট করে।
আরও পড়ুন- ভারত সীমান্তে চিনের কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন আমেরিকা, স্পষ্ট জানালেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব
পোস্টের স্ক্রিনশটগুলো ভাদেরওয়াহ শহরে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। আর, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করায় ওই ছাত্রকে গ্রেফতারের দাবি জানাতে পথে নামেন। রাতেই ভাদেরওয়াহ শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ চূড়ান্ত আকার নেয়। শেষ পর্যন্ত প্রশাসন কড়া হাতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করে। শনিবারও সেখানে উত্তেজনা থাকায় কার্ফু তাই প্রত্যাহার করা হয়নি।
Read full story in English