Advertisment

কেন মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিল আমফান?

পূর্ববর্তী ঘূর্ণিঝড় আয়লা, ফণি, বুলবুকের থেকেও এই আমফান ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা অনেক বেশি। স্থলভাগেও ঢুকেও তীব্রতার অনেকটাই বজায় রেখেছে আমফান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
super cyclone amphan

আমফানের স্যাটেলাইট চিত্র, ১৮ মে। ছবি সৌজন্য: উইকিপিডিয়া

বঙ্গোপসাগরপৃষ্ট থেকে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ইতিমধ্যেই ভয়াল রূপ নিয়ে প্রবেশ করেছে বাংলার উপকূলে। যার জেরে সাগরদ্বীপ, বকখালি, দিঘা তছনছ। কলকাতা এবং রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতেও হানা দিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্ববর্তী ঘূর্ণিঝড় আয়লা, ফণি, বুলবুকের থেকেও এই আমফান ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা অনেক বেশি। স্থলভাগেও ঢুকেও তীব্রতার অনেকটাই বজায় রেখেছে আমফান। তবে এখনও অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আপনাদের মনেও। এক নজরে দেখে নিন সেই উত্তর

Advertisment

এই মুহুর্তে কী অবস্থায় আছে আমফান?

কলকাতা থেকে এই মুহূর্তে ৫০ কিমি দূরে রয়েছে আমফান। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডফলের সময় কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিমি। দীঘার উপকূল ছুঁয়ে উত্তরপূর্বমুখী বাঁক নিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। সাগরদ্বীপ, বকখালি হয়ে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় আসছে আমফান। ২১ তারিখ অর্থাৎ আগামীকাল পর্যন্ত বাংলাতেই অবস্থান করবে এই ঝড়। এরপর বাঁক নেবে বাংলাদেশের দিকে। ইতিমধ্যেই রাজ্য শুরু হয়েছে আমফান তান্ডবলীলা।

আমফানের মতোই ১৯৯৯ সালে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া প্রথম সুপার সাইক্লোনটি কতটা বিধ্বংসী ছিল?

১৯৯৯ সালে ওড়িশা প্রথম একটি সুপার সাইক্লোন দেখে। প্রকৃতির কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল উপকূলীয় রাজ্যটি। যার জেরে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ছিল সেটাই। ১৯৯৯ এর সুপার ঘূর্ণিঝড়টি প্রায় ২০ লক্ষ প্রাণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। প্রায় দুই লক্ষ পশুপাখী এবং প্রায় কুড়ি থেকে তিরিশ লক্ষ মানুষ এর কোপে পড়েছিল। দীর্ঘদিনের জন্য কৃষিজমির বড় অংশকে চাষের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল রাজ্যে। কারণ সমুদ্রের জলে লবনাক্ততা মিশে গিয়েছিল ওড়িশার কৃষিজমিতে।

আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে কী পূর্বাভাস রয়েছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্য?

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মতোই রাজ্যের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন আমফান। আজ দুপুরেই ওড়িশা, পারাদ্বীপ হয়ে বিকেলে দীঘা এবং সুন্দরবনে আছড়ে পড়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। স্থলভাগে আসার পর উত্তর এবং উত্তরপূর্বমুখী হয়ে কলকাতার পূর্বভাগ ঘেষে বাংলাদেশের পথ ধরবে এই ঝড়। এই মুহুর্তে কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে আমফান। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে রাজ্যের একাধিক জেলায় শুরু হয়ে গিয়েছে ঝড় বৃষ্টি। প্রবল বেগে বইছে হাওয়াও। দীঘা উপকূলে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় বইছে ঝড়। শুরু হয়েছে প্রবল জলচ্ছ্বাসও। ইতিমধ্যেই আমফানের জেরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়া এবং প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছে আমফানের জেরে। আগামীকাল অবধি চলবে এই রেশ। ২১ তারিখ নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদে একই তান্ডবলীলা চালাবে আমফান।

অন্যান্যে রাজ্যেও আমফানের প্রভাব পড়বে কতটা?

মৌসম ভবনের খবর অনুযায়ী দেশের মধ্যে আমফানের পরোক্ষ রেশ থাকবে সিকিম, আসাম এবং মেঘালয়ের উপরই। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি সিকিমেও ২১ তারিখ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হবে। এদিকে আসাম ও মেঘালয়ের কোনও কোনও এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ল্যান্ডফলের পর কোনদিকে এগোবে আমফান?

মৌসম ভবন এবং আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে ল্যান্ডফলের পর সম্ভবত উত্তর থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে যাত্রা করবে আমফান। অর্থাৎ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে কলকাতার পূর্বদিক ছুঁয়ে বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে দুর্বল হবে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

weather West Bengal
Advertisment