বৃহস্পতিবার বিকেলেiই আছড়ে পড়বে ভয়াভ ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়। চার ঘন্টার বেশি সময় ধরে তান্ডব চালানোর আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ উপকূলবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে নৌবাহিনী।
ধেয়ে আসছে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়'। ১৫ জুন গুজরাটের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে এই সাইক্লোন। ইতিমধ্যেই তার পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। পুর্বাভাস অনুসারে জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ আছড়ে পড়বে 'বিপর্যয়'। গুজরাটের মান্ডবি থেকে পাকিস্তানের বন্দর শহর করাচির মধ্যে আছড়ে পড়বে অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে এই ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। স্থলভাবে ঢোকার সময় হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়' যত স্থলভাগের দিকে এগোবে, ততই হাওয়ার গতি কমবে। সেক্ষেত্রে ঝড়ের গতি কমে ঘণ্টায় ১২০ কিমি দাঁড়াবে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। গুজরাটের উপকূলবর্তী জেলাগুলির মধ্যে কচ্ছ, দ্বারকা, মোরবি, রাজকোট ও পোরবন্দরে ঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে সমুদ্র উত্তাল। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১৪ থেকে ১৬ জুন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সতর্কতা হিসাবে, ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে ৯৫টি ট্রেন। পশ্চিম রেলওয়ে জানিয়েছে যে এই ১৫ জুন পর্যন্ত ট্রেনগুলি বাতিল থাকবে। গুজরাট থেকে এখনও পর্যন্ত ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ভারতীয় নৌবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। গুজরাটের কচ্ছের হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া।
হাসপাতাল্গুলিতে উপলব্ধ অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বেডের বিষয়েও তথ্য জানতে চেয়েছেন তিনি। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের তরফে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানেও তৎপরতা তুঙ্গে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। প্রবল বেগে বাতাসের সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে উপকূলবর্তী একাধিক জেলাতে।
আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় গুজরাটের দিকে ধেয়ে আসতেই রাজস্থানে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগ সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। মুখ্যসচিব ঊষা শর্মা জেলা শাসকদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক সেরেছেন। তিনি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে রাখার বিষয়ে নির্দেশও দিয়েছেন। শুক্রবার ও শনিবার রাজ্যে ঝড়ের প্রভাব দেখা যাবে।প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বুধবার ঘূর্ণিঝড় বিপরজয় মোকাবেলার প্রস্তুতির পর্যালোচনা করতে তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক করেন। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ-এর একাধিক দলকে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারে তাৎক্ষণিকভাবে ৫৯৭টি টিম গঠন করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের তরফে।