ধেয়ে আসছে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। হাতে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। আতঙ্কের প্রহর গুণছে ওড়িশা-সহ পুরী। তার আগেই হাওয়ার দাপটে উড়ে গেল পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের ছোটো ধ্বজা। ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। জগন্নাথ দেবের মন্দিরের চূড়ায় ১৫ ফুট লম্বা ধ্বজা সরানো হয়। পরিবর্তে রাখা হয় ৪ ফুট লম্বার ধ্বজা। সেই ছোটো ধ্বজাই এদিন উড়ে যায়। মন্দির সূত্রে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানানো হয়েছে, ওই ধ্বজা ফের লাগানো হবে। কারণ ধ্বজা না থাকলে মন্দিরে ভোগ হবে না।
এদিকে, শুক্রবার দুপুরের পরই ঘণ্টায় ১৭৫-১৮৫ কিমি বেগে আছড়ে পড়বে ফণী। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছুঁতে পারে ঘণ্টায় ২০০ কিমি। ইতিমধ্যেই ঝড়-ঝাপটা সামলাতে উঠেপড়ে লেগেছে ওড়িশা প্রশাসন। পুরী থেকে সরানো হচ্ছে পর্যটকদের।
এ প্রসঙ্গে শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত সোমনাথ খুন্টিয়া জানালেন, ‘‘রাজ্য সরকারের মন্দির কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লম্বা ধ্বজা সরানো হয়েছে। যাতে এটা উড়ে না যায়।’’ তিনি এও বললেন, ‘‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, মন্দিরের কিছু হবে না।’’
আরও পড়ুন: কাল ওড়িশায় ধেয়ে আসছে ‘ফণী’, বাংলাতেও তাণ্ডবের আশঙ্কা
এদিকে, ফণীর জেরে চূড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে বাংলার এই পড়শি রাজ্যে। সব পর্যটকদের যেমন পুরী থেকে সরানো হচ্ছে, তেমনই সমুদ্রসৈকতে ব্যবসায়ীদেরও অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ফণীর জেরে সমুদ্রসৈকতে ব্যবসা মার খেতে পারে বলে আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। সমুদ্রে কোনওরকম বোট রাইড করা যাবে না বলে প্রশাসনের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সুশান্ত নায়েক নামের এক পর্যটন ব্যবসায়ী বললেন, এটাই আমাদের আয়ের বড় উৎস। কিন্তু এখন আমাদের এখান থেকে যেতে হবে। পর্যটকদেরও তো নিয়ে যেতে পারব না চিল্কা হ্রদে এখন।
ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলা মোকাবিলা করতে সবরকম বন্দোবস্ত করতে মরিয়া প্রশাসন। ফণীর জেরে ওড়িশার ১১টি উপকূলীয় জেলায় লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি তুলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওড়িশার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুরেন্দ্র কুমার জানিয়েছেন, স্ট্রং রুমে ইভিএম সুরক্ষিত রাখার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৮টি দল মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওড়িশা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২২টি টিমও থাকছে। একইসঙ্গে ৩৩৫টি দমকলের ইউনিট রাখা হচ্ছে।
এদিকে, রেলের তরফেও আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইস্ট-কোস্ট রেলের তরফে ৭৪টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। আজ থেকেই বাতিল করা হয়েছে ইস্ট-কোস্ট ও করমণ্ডল এক্সপ্রেস। একথা জানিয়েছেন ইস্ট-কোস্ট রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জে পি মিশ্র। দক্ষিণ-পূর্ব শাখাতেও বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
Read the full story in English