সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ঘূর্ণিঝড় মিচাংয়ের জেরে ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন চেন্নাইয়ের রাস্তায় এক ব্যক্তি। (পিটিআই ফটো)
ইন্ডিয়া মেটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট (আইএমডি) অনুসারে, ঘূর্ণিঝড় মিচাংয়ের ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি এবার উত্তরের দিকে সরে যেতে পারে। তা দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের পর দুই বছরের মধ্যে মিচাং-ই প্রথম ঘূর্ণিঝড়, যা উপকূল অতিক্রম করল। চেন্নাইয়ে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টি-সম্পর্কিত ঘটনায় কমপক্ষে ১৭ জন মারা গেছেন বলেই স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। শহরের বড় অংশ আপাতত নিমজ্জিত।
চেন্নাইয়ের পরিস্থিতি সোমবারই, ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ অন্ধ্র উপকূলের কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধ্র প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী উত্তর তামিলনাড়ু-পুদুচেরি উপকূলের জন্য আবহাওয়া দফতর কমলা সতর্কতা জারি করেছিল। সেই সতর্কবাণী সার্থক করে অবিরাম বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। যাতে চেন্নাই এবং এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সড়ক থেকে বিমান, যাবতীয় পরিবহণ পরিষেবা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের দক্ষিণ উপকূলবর্তী গ্রামগুলোয় বসবাসকারী প্রায় ৯০০ জনকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র বাপটলা জেলাতেই অস্থায়ী ২১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র বানানো হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন বাপটলার পুলিশ সুপার ভাকুল জিন্দাল।
Advertisment
অন্ধ্রেও প্রভাব ঘূর্ণিঝড় মিচাং-এর জেরে নেলোর এবং কাভালির মধ্যে ভূমিধসের কয়েক ঘণ্টা পরেও ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। যার জেরে উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের জেলাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে, কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু, চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিস্তীর্ণ জমির ফসল ভেসে গেছে। অন্ধ্র সরকার যুদ্ধের মত তৎপরতায় উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে। তিরুপতি, নেলোর, প্রকাশম, বাপটলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, কোনাসিমা এবং কাকিনাডা- আটটি জেলাজুড়ে মোট ২১১টি অস্থায়ী ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। যাতে প্রায় ৯,৫০০ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
পরিবহণে প্রভাব ইতিমধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া ১৪০টিরও বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে ৪০টি বিমানও। ঘূর্ণিঝড় মিচাং মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ১১০ কিলোমিটার (70 মাইল প্রতিঘণ্টা) বেগে বয়ে গিয়েছে। তার আসার আগে তীব্র বৃষ্টি এবং বন্যার ফলে নয় জন ৯ জন মারা গিয়েছেন। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ কমে ঘণ্টায় ৬৫-৭৫ কিলোমিটার হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে অন্ধ্রপ্রদেশে মোট ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার ওপর গাছ আছড়ে পড়েছে। দুর্যোগের মধ্যে তা সরানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রশাসনের লোকজন।