প্রজাপতির ঝাপটায় বিধ্বস্ত ওড়িশা ও অন্ধ্র প্রদেশ। ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র তাণ্ডবে অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলায় কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের ওই জেলাতেই সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়েছে বহু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। তবে ওড়িশায় প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই এড়ানো গিয়েছে মিশন জিরো ক্যাজুয়ালটির সুবাদে। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের উদ্যোগেই এই মিশন। যার জেরে অনেকটাই সাফল্য মিলেছে বলে জানিয়েছেন সরকারি আধিকারিকরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গঞ্জাম জেলায় ক্যানালে ডুবে মৃত্যু হয়েছে আট বছরের এক বালকের। অন্যদিকে, ছয় ব্যক্তি এখনও নিখোঁজ। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
শুধু ঝড়ই নয়, ব্যাপক বৃষ্টির জেরে বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রীকাকুলাম জেলার কোটাবোমালি মণ্ডল ও পালাসা এলাকা। বেশ কিছু এলাকায় ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। যার জেরে শ্রীকাকুলাম জেলার বেশ কিছু জায়গা বিদ্যুৎহীন। ওই এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করতে কমপক্ষে এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের পর উদ্ধারকাজে তদারকিতে নজর দিয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। দুর্গতদের ত্রাণের ব্যবস্থা করতে ইতিমধ্যেই জেলা আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি টেলি কনফারেন্সে আধিকারিকদের উদ্দেশে অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "প্রতিটা ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ এখন।"
শ্রীকাকুলাম ও পড়শি ভিজিয়ানাগ্রাম জেলায় উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ দল। শ্রীকাকুলাম জেলায় অন্ধ্র প্রদেশ স্টেট রোড ট্রান্টপোর্ট কর্পোরেশনের বাস পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন, ‘তিতলি’র প্রভাবে এ রাজ্যে বৃষ্টি, পর্যটকশূন্য দিঘা
ওড়িশার বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ নজরে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্পেশাল রিলিফ কমিশনার বিষ্ণুপদ শেঠি। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, উপকূল ও নীচু এলাকা থেকে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। ১,১১২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে এজন্য। গঞ্জাম দেলার ভুটাপাংকল গ্রামে ব্যাপক বৃষ্টিতে বানভাসি অবস্থা। যেখানে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বাড়ি। যার জেরে দুই পরিবারের মোট ছজন নিখোঁজ হয়েছেন। বলে জানা গিয়েছে। পুরী ও পারাদ্বীপের উপকূলবর্তী শহরগুলিতে ঢেউ আছড়ে পড়ছে। চিল্কা হ্রদ এলাকার কাছে কয়েকটি গ্রামে এখনও সতর্কতা জারি করা রয়েছে।
অন্যদিকে, তিতলির প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে আজ ও কাল বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই কলকাতাসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আকাশের মুখ ভার।