হিন্দু দেবতাকে অপমান করায় রাজস্থানের আলোয়ারের এক মন্দিরে দলিত নিগ্রহের অভিযোগ উঠল বেশ কয়েকজন বাসিন্দার বিরুদ্ধে। 'কাশ্মীর ফাইলস' সিনেমা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা করতে গিয়ে ওই দলিত ব্যক্তি হিন্দু দেবতা সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। এরপর ওই ব্যক্তিকে মন্দিরের মেঝেয় নাকেখত দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যাতে রাজেশকুমার মেঘওয়াল নামে ওই দলিত ব্যক্তিকে মন্দিরের মেঝেয় নাকেখত দিতে দেখা গিয়েছে।
নির্যাতিতর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজস্থান পুলিশ ১১ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তার মধ্যে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই ব্যাপারে সার্কেল পুলিশ ইনস্পেক্টর বেহরর আনন্দ কুমার জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, আরও কয়েকজন ঘটনাস্থলে ছিলেন। রাজেশকুমার নাকেখত দেওয়ার সময় ওই ব্যক্তিরা তাঁকে ঘিরে গোল করে দাঁড়িয়েছিলেন। মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, নির্যাতিত রাজেশকুমার নিজে নাকখত দিতে চাইছেন না। তাঁকে নাকেখত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।
সার্কেল পুলিশ ইনস্পেক্টর জানিয়েছেন, নির্যাতিত ব্যক্তি এক বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি দিন তিনেক আগে 'কাশ্মীর ফাইলস' সিনেমা দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টে তিনি ওই সিনেমার বিরুদ্ধেই লিখেছিলেন। তার পরিবর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু পালটা মন্তব্য হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্যাতিত প্রশ্ন করেছিলেন, শুধু কি পণ্ডিতদের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে হামলা হয়েছিল? দলিতদের বিরুদ্ধে কোনও হামলা হয়নি? তিনি লিখেছিলেন, দরিদ্রদের প্রতি প্রতিদিন নৃশংসতা চলছে। আর, তাঁদের নিরাপত্তার জন্য কিছুই নেই।
আরও পড়ুন- বৈবাহিক হলেও ‘ধর্ষণ ধর্ষণই’, জানাল কর্নাটক হাইকোর্ট
মেঘওয়ালের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পালটা ফেসবুকে কেউ কেউ 'জয় শ্রীরাম' এবং 'জয় শ্রীকৃষ্ণ' লিখেছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই মেঘওয়াল হিন্দু দেবতাদের সম্পর্কে কটূক্তি করেছিলেন। পরে, এই মন্তব্যের জন্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমাও চেয়ে নেন। কিন্তু, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মন্দিরে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন। ক্ষমা চাওয়ানোর জন্য তাঁকে এক মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে নাকেখত দিতে বাধ্য করা হয়। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী। তিনি অভিযোগ করেছেন, রাজস্থান সরকার দলিতদের সুরক্ষা দিতে পারছে না। সেই কারণে, রাজস্থানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারিরও দাবি জানান মায়াবতী।
Read story in English