Advertisment

দলিত স্ত্রীকে গৃহছাড়া করল স্বামী, শ্বশুরবাড়ির দোরগোড়াতেই পড়ে রইলেন সহায় সম্বলহীনা

দু'দিন কার্যত নির্জলা কাটানোর পরেও শ্বশুরবাড়ির নজর না পড়লে, পুলিশের তৎপরতায় অসুস্থ ভারতীকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
dalit, dalit community

দুই কন্যাকেনিয়ে শ্বশুরবাড়ির দরজায় পড়ে রইলেন ভারতী

দলিত মহিলা নিপীড়নের ঘটনায় ফের লজ্জায় মুখ ঢাকল দেশ। দলিত সমাজের দুই সন্তানের মা-কে বাড়ি থেকে মেরে তাড়াল স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির পরিজনেরা। ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার হুসনাবাদে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি থেকে বিতাড়িত পঁচিশ বছরের ভারতীর সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। কী খাবেন? কোথায় যাবেন দুই কন্যাকে নিয়ে? অগত্যা শ্বশুরবাড়ির দোরগোড়াতেই ঠাঁই নিয়েছিলেন। কিন্তু দু'দিন কার্যত নির্জলা কাটানোর পরেও শ্বশুরবাড়ির নজর না পড়লে, পুলিশের তৎপরতায় অসুস্থ ভারতীকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে।

Advertisment

আরও পড়ুন, বালাকোটে পাক শেলিং, স্কুলে আটকে বহু পড়ুয়া

কিন্তু কেন এমন নিষ্ঠুরতা? জানা যায়, ১১ সেপ্টেম্বর ভারতীর স্বামী এম রঞ্জিত তাঁকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলে, কারণ ভারতী দলিত সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ছিলেন। এমনকি 'দলিত' ভারতীর জন্যই যে তাদের বাড়িতে আত্মীয়রা আসতে অস্বীকার করছেন, এমন কথাও ভারতীকে বলে রঞ্জিত। ভারতী এবং রঞ্জিতের বিয়ে হয় চার বছর আগে। একটি অনলাইন সাইটে তাঁদের পরিচয়, সেখান থেকেই প্রেম এবং পরিণয়। দুজনেই সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি থেকে উঠে এলেও রঞ্জিত ছিল পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, এবং ভারতী হলেন মালা (তফসিলি) সম্প্রদায়ের। তবে সেই বিবাহবাসরে আত্মীয় পরিজনেরা যোগ না দিলেও রঞ্জিতের পরিবার মেনে নেয় ভারতীকে।

ঠিক কী সমস্যা ছিল?

জানা যায়, বিয়ের এক বছর যখন ভারতী কন্যাসন্তানের জন্ম দেন, তখন থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। সিদ্দীপেট জেলার হুসনাবাদ থানার পুলিশকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতী বলেন, কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ীর সদস্যরা তাঁকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করতে শুরু করে। এমনকি যৌতুকও দাবি করে। পুলিশকে দেওয়া বিবৃতিতে ভারতী আরও বলেন, বিয়ের সময় পণ বাবদ তাঁর মা-বাবা ৫ লক্ষ টাকা দেন এবং হুসনাবাদে বেকারি শুরু করতে রঞ্জিতকে সাহায্যও করেন।

গত বছরই আরেক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ভারতী। তারপর যেন আরও প্রবল হয়ে ওঠে অত্যাচার। হুসনাবাদ থানার ইন্সপেক্টর বি শ্রীনিবাস জানান, ভারতী দলিত সম্প্রদায়ের হওয়ায় আত্মীয়রা তাদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন, এই অজুহাতে রঞ্জিত এবং তার বাবা-মা তাঁকে বেশ কয়েকবার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে।

আরও পড়ুন- কাশ্মীর ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের উস্কানির চেষ্টা ইমরানের

ভারতী থানায় অভিযোগ করেছেন এই মর্মে যে, তাঁকে মারধর করে, দুর্ব্যবহার করে দুই মেয়ে সমেত তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এবং শ্বশুরবাড়িতে ফিরতে চাইলে তাঁকে ২০ লক্ষ টাকা যৌতুক আনতে বলা হয়। ভারতীর মা-বাবা তাঁর শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললেও কোনও লাভ হয়নি বলেই জানান দুই সন্তানের মা। উপরন্তু স্বামী রঞ্জিত তাঁকে ডেকে বলে, সে পুনরায় বিবাহ করতে চলেছে। এই খবর শুনেই ভারতী শ্বশুরবাড়ি এসে দেখেন, ঘর তালাবন্ধ। দু'দিন ধরে সেখানেই দুই মেয়েকে নিয়ে হত্যে দিয়ে বসে থাকেন তিনি। ভারতীকে এভাবে বসে থাকতে দেখে স্থানীয়রাই পুলিশে খবর দেন। ইন্সপেক্টর বলেন, "আমরা রঞ্জিতদের নামে তফসিলি আইনের ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করেছি। কাউন্সেলিংয়েরও ব্যবস্থা করেছি।"

Read the full story in English

Dalit
Advertisment