Advertisment

করোনার কোপে স্কুলে তালা, অসহায় নাচের শিক্ষকের চাকরির ব্যবস্থা পুলিশের

করোনার জেরে নাচের স্কুলে শিক্ষার্থীদের আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্কুলের ভাড়া মেটাতে না পারায় সেটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন এই ব্যক্তি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Dance teacher loses livelihood to Covid 19 pandemic, Delhi Police helps him find job

অতিমারীর জেরে জীবিকার সংস্থান খোয়ানো এক ব্যক্তির চাকরির বন্দোবস্ত করল পুলিশ।

মানবিক পুলিশ। করোনার জেরে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এক নাচের শিক্ষকের পাশ দাঁড়াল দিল্লি পুলিশ। ভিনরাজ্য থেকে আসা ওই নৃত্য শিল্পীর জন্য একটি চাকরির খোঁজও করে দিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশের এই মানবিক আচরণে স্বভাবতই বেশ খুশি ওই ব্যক্তি। ফের একবার জীবনে নতুন করে পথ চলা শুরু বছর চুয়াল্লিশের বালাজি সাওয়ালকরের।

Advertisment

করোনার জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশের আর্থিক পরিকাঠামো। অন্য বেশ কয়েকটি দেশের পাশাপাশি করোনা অতিমারীর জেরে এদেশেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে আর্থিক কর্মকাণ্ড। করোনা অতিমারীর কোপে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। সংসার চালাতে বাধ্য হয়েই জীবিকা বদলাতে হয়েছে অনেককে। গাড়িচালক হয়েছেন সবজিওয়ালা। আবার সিনেমা হলের কর্মীদের রাস্তায় ফেরি করতেও দেখা গিয়েছে।

অতিমারীর কোপে কাজ হারানো অন্য বহু মানুষের মতোই এক ব্যক্তি বালাজি সাওয়ালকর। মুম্বইয়ে থাকতেন তিনি। তবে করোনার জেরে সেখানে তাঁর নাচের স্কুলে তালা ঝুলেছে। জীবিকার সন্ধানে রাজধানী দিল্লিতে এসেছিলেন বালাজি। কিন্তু দিল্লিতেও কাজের কোনও বন্দোবস্ত করতে পারেননি তিনি। শেষমেশ জমানো পুঁজি ফুরোতেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। শহরের গৃহহীনদের জন্য তৈরি রাতের আশ্রয়কেন্দ্র ‘রেইন বাসেরা’- হয় তাঁর ঠিকানা।

গৃহহীনদের এই আশ্রয়কেন্দ্রে বালাজিকে দেখতে পান দিল্লি পুলিশের কয়েকজন আধিকারিক। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই নিজের কাহিনী পুলিশকর্মীদের জানান ওই ব্যক্তি। পুলিশি সহায়তায় শেষমেশ একটি রোস্তোরাঁতে কাজের বন্দোবস্ত হয়েছে তাঁর। সংসবাদসংস্থা পিটিআই-কে সাওয়ালকার জানান, তিনি একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী। গত ২০ বছর ধরে পারফর্ম করে চলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন- পড়ুয়া-স্বার্থে বেনজির উদ্যোগ, স্কুলের মাঠে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা

তিনি আরও বলেন, ''মুম্বইয়ে আমার একটি নাচের ইনস্টিটিউট ছিল যা করোনার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঘর ভাড়া দিতে না পারায় নাচের স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়। আমার টাকা ফুরিয়ে গিয়েছিল। মুম্বই ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি। মুম্বই ছাড়ার পর ওড়িশা ও বিহার সহ বিভিন্ন জায়গায় চার থেকে পাঁচজন ছাত্রের বাড়িতেও গিয়েছিলাম। আমি একটি নতুন অ্যাকাডেমি খোলার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু এখানে এসে একই পরিস্থিতি দেখছি।''

গত বছরের ৪ নভেম্বর দীপাবলির দিনে ট্রেনে দিল্লিতে পৌঁছোন বালাজি সাওয়ালকর নামে এই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ''আমি এখানে পৌঁছে প্রথমে বাংলা সাহেব গুরুদ্বারে থাকতাম। পরে কাছাকাছি একটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে শুরু করি। এখানে থাকার ও খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। এখানেই SHO স্যার এসেছিলেন। এখান থেকে কয়েকজনকে তিনি খুঁজে নেন। যাঁদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তিনি আমাদের জন্য কাজের খোঁজ দেন।''

গত ১৮ জানুয়ারি থেকে দিল্লির কনট প্লেসে 'স্যান্ডোজ' নামে একটি রেস্তোরাঁয় কাজে যোগ দিয়েছেন বালাজি সাওয়ালকর। প্রতি মাসে ১৮ হাজার টাকা করে তিনি বেতন পান। তিনি বলেন, ''আমার লক্ষ্য নাচের শিক্ষক হিসেবেই প্রতিষ্ঠা পাওয়া। যাই হোক, যেহেতু আমি এখন নাচ শেখানোর সুযোগ পাচ্ছি না, তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য কিছু তো একটা করতে হবে। তাই এই কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।''

Read story in English

Delhi Police Corona in India Coronavirus Pandemic Delhi Corona
Advertisment