ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় আইইডি বিস্ফোরণে ১০ জওয়ানের মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্তে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে মাওবাদীরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই দিন ঘটনাস্থল থেকে ১০ মিটার দূরে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জওয়ানদের গাড়িটিকে থামিয়েছিলেন। আমা উৎসবের চাঁদার অজুহাত গাড়িটি থামিয়ে তাঁরাই জওয়ানদের গতিবিধির কথা মাওবাদীদের জানিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২৬ এপ্রিল দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী হামলায় ১০ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। ছত্তিশগড়ের মাওবাদী অধ্যুষিত বস্তার এলাকায় ওই বিস্ফোরণ ঘটে। জানা গিয়েছে, ওই দিন বিস্ফোরণের কয়েক মিনিট আগে, ধৃত দুই মাওবাদীকে নিয়ে জওয়ানদের আরএকটি গাড়ি ওই রাস্তা দিয়েই গিয়েছিল। জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে আরানপুর সড়কে বুধবার দুপুর ১টা থেকে ১.৩০ মিনিটের মধ্যে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল বিজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক বিক্রম মান্ডবীর কনভয় মাওবাদীদের হমালর মুখে পেছিল। বিধায়কের কনভয় গাঙ্গালুর তহসিলের একটি গ্রাম থেকে বিজাপুর শহরে ফিরছিল। ঠিক সেই সময় হামলা চালায় মাওবাদীরা। যদিও সেই হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ওই ঘটনার পর মাওবাদীরে বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযান শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন- বাস ভাঙচুর, মারামারি, উত্তরবঙ্গের ৮ জেলায় BJP-র ডাকা বনধের মিশ্র প্রভাব
এদিকে, ডিআরজি পুলিশকর্মীরা দান্তেওয়াড়া শহরে তাঁদের সদর দফতর থেকে সাধারণ একটি গাড়িতে আরানপুরে এসেছিলেন। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, আরানপুরের কাছে সশস্ত্র মাওবাদীদের উপস্থিতির খবর তাঁরা পেয়েছিলেন। দ্রুত অভিযানে নামা হয়েছিল। তিনি বলেন, “বুধবার সকালে আরানপুর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে নাহাদি গ্রামের কাছে টহলদারি জওয়ানদের দল এবং মাওবাদীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দুই সন্দেহভাজন মাওবাদী গুলিবিদ্ধ হয়।”
একজন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তার মতে, প্রোটোকল এটাই নির্দেশ করে যে নিরাপত্তা বাহিনী নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরে এবং রুটের স্যানিটাইজেশনের পরেই অপারেশন চলাকালীন এগিয়ে যায়। নিরাপত্তা বাহিনী মাঝে মাঝে রোড ওপেনিং পার্টির (আরওপি) সাহায্যও নেয়, যাতে কনভয়ের ক্ষেত্রে কোনও হুমকি না থাকে। সূত্র জানিয়েছে, “যখন তারা (ডিআরজি কর্মীরা) ফিরে আসছিলেন, সেখানে কোনও আরওপি ছিল না। প্রথম গাড়িটি, যেটিতে দুই সন্দেহভাজন মাওবাদী ছিল, প্রথম (আইইডি) পয়েন্টটি অতিক্রমও করেছিল। দ্বিতীয় গাড়িটি (একটি ব্যক্তিগত ভ্যান) স্থানীয়রাই আমা উৎসবের জন্য কিছু অনুদান চাওয়ার অজুহাতে থামিয়ে দিয়েছিল।"
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়িচালক ধনীরাম যাদব আইইডি পয়েন্টের মাত্র ১০০ মিটার আগে গাড়ি থামিয়েছিলেন। সূত্র জানাচ্ছে, “স্থানীয়রাই মাওবাদীদের সংকেত দিয়েছিল। এই সম্ভাবনা রয়েছে। গাড়িতে যে ডিআরজি জওয়ানরা ছিলেন এবং তাঁদের হাতে যে অস্ত্রও ছিল সেই তথ্য স্থানীয়রাই সম্ভবত মাওবাদীদের দিয়েছিলেন। ভ্যানটি পয়েন্টে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে এবং গাড়িটি প্রায় ৫০ মিটার দূরে উড়ে যায়।”