অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের আর মাত্র একদিন বাকি। সোমবার (২২ জানুয়ারি) প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর মন্দির দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রায় ৮ হাজার আমন্ত্রিতকে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে। শহর জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল থেকেই রাম মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর আবার ২৩ জানুয়ারি থেকেই খুলতে চলেছে অযোধ্যার রাম মন্দির।
আগামীকাল অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন। আলোয় ঝলমল করছে গোটা শহর। নব নির্মিত রাম মন্দির ও কৃষ্ণশিলার রামলালাকে দর্শন করতে সারা দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এসে মিশেছেন উৎসবের আবহে। মিলেমিশে একাকার বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতি। মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে রাম-সীতার গান। চলছে রামচরিতমানস পাঠ। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি, এসেছেন ভক্ত ও সাধু-সন্তরা। ফুলে ফুলে ঢাকা রাম মন্দির। আজ ১২৫টি কলসের জলে রামলালার মূর্তিকে স্নান করানো হবে।
এদিকে জনস্রোত রুখতে গতকাল রাত থেকেই অযোধ্যার সব রাস্তা সিল করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহর। ড্রোন উড়িয়ে চলছে নজরদারি। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে বেলা ১২টা ৫ থেকে ১২টা ৫৫ পর্যন্ত। রাম মন্দির ট্রাস্টের তরফে জানানো হয়েছে ৮ হাজার আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সীতারাম ইয়েচুরি-সহ অনেকেই আসছেন না। তবে বলিউড ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের প্রায় সবাই রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
পঞ্চম দিনে দুই দফায় অনুষ্ঠান হয়। সকালে পূজা ও যজ্ঞের পর প্রতিমাকে চিনি ও ফল নিবেদন করা হত। এর পরে, গর্ভগৃহটি ৮১ টি কলসে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। সম্পূর্ণ মণ্ডপ ও মন্দিরের বাস্তু শান্তি ও প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। প্রাণ প্রতিষ্ঠার মূল অনুষ্ঠানের জন্য রাম মন্দিরসহ গোটা অযোধ্যা সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে রাম মন্দিরের প্রতিটি কোণ। মূল অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করেছেন সাধু-ঋষিসহ অনেক অতিথি।
৮ হাজার অতিথি ছাড়াও অন্যান্য ভক্তদের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে মন্দিরের চারপাশে হাজির থাকবেন। এমন পরিস্থিতিতে এখানে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকে অযোধ্যা পুরোপুরি সেনানিবাসে পরিণত হয়েছে। শহরের এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে রাম মন্দির পর্যন্ত প্রতিটি কোণায় পুলিশ এবং এটিএস কমান্ডোদের মোতায়েন করা হয়েছে। ব্ল্যাকক্যাট কমান্ডো, সাঁজোয়া যান এবং ড্রোনে মুড়ে ফেলা হয়েছে রাম নগরী। সরযূ নদীর কাছে NDRF টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশ অযোধ্যায় তিনজন ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিকদের মোতায়েন করেছে। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোর দার করতে ১৭ জন আইপিএস, ৩২৫ জন পরিদর্শক, ৪০০ জন সাব-ইন্সপেক্টর এবং ১হাজারের বেশি কনস্টেবলকে মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তায় যাতে কোনো ত্রুটি না হয় সেজন্য রেড জোন ও ইয়েলো জোনে ভাগ করা হয়েছে রাম নগরী।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়া রাখতে পুলিশ ছাড়াও বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। অযোধ্যায় দায়িত্ব নিয়েছে বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা এসআইএস। কোম্পানির ডিরেক্টর ঋতুরাজ সিনহা বলেছেন যে অযোধ্যায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখতে আমরা এআই প্রযুক্তির সাহায্যও নিচ্ছি।
সোমবারের জন্য ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সাড়া হয়ে গিয়েছে। মন্দিরে "রাম লালা বিরাজমান"মূর্তিটি গতকাল থেকে সাধারণের জন্য দর্শন বন্ধ করা হয। এটি রবিবার সন্ধ্যায় গর্ভগৃহে স্থানান্তরিত হবে এবং ২৩ জানুয়ারি থেকে এর দর্শন আবার শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।