রবিবার রোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী হল শহর কলকাতা। একটি ফাঁকা জমিতে খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে উদ্ধার হলো ১৪ টি সন্দেহজনক প্লাস্টিক প্যাকেট, যেগুলিতে মোড়া রয়েছে আপাতদৃষ্টিতে ১৪টি ভ্রুণ। স্বাভাবিকভাবেই এই মোড়ক উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় হরিদেবপুর থানা এলাকায়। স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নেমে পড়েন সরকারের গাফিলতির প্রতিবাদে এবং শিশু নিরাপত্তার দাবিতে। ঘটনাস্থল থেকে মদের বোতলও উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর।
সম্ভাব্য ভ্রূণগুলি ময়নাতদন্তের জন্য এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্যাকেটগুলি খোলার পর কিছু ড্রাই আইস পাওয়া গিয়েছে মাত্র। আর যা আছে তা মনুষ্যদেহ নয় বলেই চিকিৎসকদের মত। কিন্তু সেগুলি আদপে কী, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। এ ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি সাউথ-ওয়েস্ট নীলাঞ্জন বিশ্বাস জানান, "জিনিসগুলো ভ্রূণ নয়, কোনো হিউম্যান টিস্যু পাওয়া যায় নি।"
আরও পড়ুন: ‘বন্ধুত্বপূর্ণ মিটমাট’ মানতে নারাজ, ওসি পুলক দত্তের শাস্তির দাবি চিকিৎসক সংগঠনের
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, প্যাকেটগুলিতে যা আছে তা সম্ভবত বর্জ্য পদার্থ, বা মেডিক্যাল ওয়েস্ট। কাছাকাছি নার্সিং হোম, হাসপাতাল, এবং ক্লিনিকে এই নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্র মারফৎ আরও জানা গিয়েছে, হরিদেবপুরের ওই এলাকায় প্রায় ৭২ কাঠা জমিতে এদিন জঙ্গল সাফাই করার সময়ই প্লাস্টিকের প্যাকেটগুলো নজরে আসে সাফাইকর্মীদের। নির্মাণ কাজের জন্যই সাফাই করার কাজ শুরু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে নীলাঞ্জনবাবু এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, "এদিন সকালে ওই জমিতে নির্মাণকাজের জন্য সাফাইয়ের কাজ চলছিল। সেসময়ই প্লাস্টিক প্যাকেটগুলি দেখতে পান শ্রমিকরা। পরে আমাদের খবর দেওয়া হয়। আলাদা আলাদা করে ১৪টি প্যাকেটে কিছু মোড়া ছিল।"
এ ব্যাপারে তিনি আরও জানান, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জমির মালিকানা কার, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জমির মালিক ও শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অনুসন্ধানের রিপোর্ট পেলেই এ ব্যাপারে আরও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
প্রাথমিকভাবে চাঞ্চল্য ছড়ানোর পর ঘটনাস্থলে যান মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই এলাকায় সন্ধ্যের পরই মদের আসর বসত। এমনকি, ওই জমিতে অচেনা লোকেদের আনাগোনাও ছিল বলে দাবি তাঁদের। জমি এলাকায় কোনও নিরাপত্তাকর্মীও ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে।