অন্ধ্রপ্রদেশের ভিজিয়ানাগ্রাম (বিজয়নগরম) জেলায় দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫১ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছে একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই রেলের তরফে দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের আত্মীয়দেরকে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার অনুরোধ করা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বরও। দুর্ঘটনার জেরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু ট্রেন। বদলে দেওয়া হয়েছে যাত্রাপথ।
দক্ষিণ উপকূল রেলের সূত্রে খবর, ঘটনার সময় ০৮৫০৪ বিশাখাপত্তনম-রায়গড় প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি বিশাখাপত্তনম থেকে রায়গড় যাচ্ছিল। সেই সময় ওভারলোড কেবলে ব্রেক পেয়ে লাইনের ওপর ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। তখনই 08532 বিশাখাপত্তনম-পালাসা প্যাসেঞ্জার এক্সপ্রেস এসে রায়গড়গামী প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে ধাক্কা মারে। তাতে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের তিনটি কামরা লাইচ্যুত হয়েছে। প্যাসেঞ্জার ট্রেনের লোকোমোটিভের উপরের অংশ (LP ও ALP)-সহ, বগির নীচের অংশ থেকে আলাদা হয়ে দূরে ছিটকে পড়েছে বলেই জানা গিয়েছে।স্থানীয় মানুষজন দুর্ঘটনার পর বিরাট জোরে শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন। তাঁরা উদ্ধারকার্যে হাত লাগান। খবর দেওয়া হয় রেলের কর্মীদের।
অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি আধিকারিকদের দ্রুত ত্রাণকার্য চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন। এমনটাই জানানো হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সূত্রে
এই প্রসঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সোশ্যাল মাধ্যম এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ পোস্ট করেছেন, 'মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নগরম জেলার কান্তকাপল্লি ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি আধিকারিকদের দ্রুত-ত্রাণ ব্যবস্থা নিতে এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।'
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'মুখ্যমন্ত্রী বিশাখাপত্তনম এবং আনাকাপল্লির কাছাকাছি জেলাগুলি থেকে যতটা সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে এবং কাছাকাছি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সমস্ত ধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর নির্দেশও তিনি দিয়েছেন।' রেলের তরফে দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে চালকের ত্রুটিকেই প্রাথমিক ভাবে দায়ি করা হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্য্যে তদারকি করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। ভিজিয়ানগরমের জেলা শাসক নাগলক্ষ্মী জানান, আহত ৩২ জনকে ভিজিয়ানগরমের সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। লাইনচ্যুত কোচগুলি সরাতে বিশাখাপত্তনম থেকে বড় ক্রেন আনা হয়েছে।