Advertisment

জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রাঙ্গনে হিন্দু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, কলস-ফুল-ত্রিশূলের সন্ধান: সমীক্ষা রিপোর্ট

বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্ট, বারাণসী আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আপিলের শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধে সম্মত হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Gyanvapi Mosque Case, Varanasi court to hear on May 26 Muslim side’s plea seeking to reject Hindu petitioners’ civil suit

জ্ঞানবাপী মসজিদ

আরও গভীরে জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক। ইতিমধ্যেই কোর্টের রায়ে সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। তা জমাও পড়ে গিয়েছে। কী থাকতে পারে সেই রিপোর্টে? তা নিয়ে কৌতুহল তুঙ্গে। জানা গিয়েছে যে, জ্ঞানবাপি মসজিদ কমপ্লেক্সের ভিডিওগ্রাফি সমীক্ষার দু'টি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, 'শিবলিঙ্গে'র সন্ধান মেলা যে অংশ ঘিরে রাখা হয়েছে তার বাইরে উত্তর ও পশ্চিম দিকের দেয়ালের কোণে পুরানো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও হিন্দু পুজোয় ব্যবহৃত ঘণ্টার মতো দেখতে শিল্পকর্মের নিদর্শন দেখা গিয়েছে। তেহখানার (বেসমেন্ট) স্তম্ভে কলশ, ফুল ও ত্রিশূলও দৃশ্যমান।

Advertisment

প্রতিবেদন দুটি বারাণসী আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে যা সমীক্ষা হবে। এছাড়াও বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্ট, বারাণসী আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে একটি আপিলের শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধে সম্মত হয়। বারাণসী আদালতকে শুক্রবার পর্যন্ত এই বিষয়ে নতুন করে কোনও পদক্ষেপ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অ্যাডভোকেট বিষ্ণু শঙ্কর জৈন, যিনি 'অতিরিক্ত তথ্য ও নথি রেকর্ডে আনার জন্য' সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছিলেন, তিনি বলেছেন- 'অ্যাডভোকেট কমিশনের দায়ের করা রিপোর্টের পরে, এটি স্পষ্ট যে বিতর্কিত কাঠামোটিতে একজন হিন্দুর ধর্মীয় চরিত্র রয়েছে।' তিনি বলেছিলেন যে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব 'একটি ধর্মীয় স্থানের জোরপূর্বক দখল নেওয়ার পদক্ষেপে সম্পত্তির প্রকৃতি এবং বিদ্যমান দেবতার মালিকানা অধিকারকে পরিবর্তন করা যায় না।'

৬-৭ মে-র প্রতিবেদনে, অজয় ​​কুমার মিশ্র, যাঁকে ১৭ মে অ্যাডভোকেট কমিশনার পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল, তিনি বলেছিলেন যে-' ব্যারিকেডিংয়ের বাইরে উত্তর ও পশ্চিম দেয়ালের কোণে পুরানো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এবং দেবতার কাঠামো পাওয়া গিয়েছে। হিন্দু দেবী ও পদ্মরও সন্ধান মিলেছে। একটি ফলকে শেশনাগ নকশা ছিল এবং তার ভিডিওগ্রাফ করা হয়েছিল।'

অজয় ​​কুমার মিশ্র, যিনি বারাণসী আদালতে দুই পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, '৬ এবং ৭ মে সমীক্ষাটি আমি করেছিলাম এবং এটি মসজিদ কমপ্লেক্সের বাইরের এলাকায় ছিল। এরপর থেকে আমাকে অ্যাডভোকেট কমিশনারের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আমার কাজের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা জরুরি বলে মনে করেছি। এটিকে সার্ভে রিপোর্টের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা বা না করা এখন আদালতের ব্যাপার।'

কমিশনের জরিপের দ্বিতীয় প্রতিবেদনটি ১২ পৃষ্ঠার। বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী অ্যাডভোকেট কমিশনার অজয় ​​প্রতাপ সিংয়ের উপস্থিতিতে বিশেষ আইনজীবী কমিশনার বিশাল সিং সেটি আদালতে জমা দেন। লিখিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি, সিং তিনটি সিল করা বাক্সে প্রমাণ হিসাবে ভিডিও রেকর্ডিংও জমা দিয়েছেন। এগুলি ১৪, ১৫ এবং ১৬ মে সমীক্ষার ভিডিও। এই তিন দিনে, বিশাল সিং, অজয় ​​প্রতাপ সিং এবং অজয় ​​কুমার মিশ্র যৌথভাবে সমীক্ষাটি করেছিলেন।

বিশাল সিং সাংবাদিকদের বলেন, রিপোর্টটি সুষ্ঠুভাবে তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'প্রতিবেদনটি জ্ঞানবাপী মসজিদের ভেতরের এলাকা নিয়ে।'

জ্ঞানবাপী মসজিদ পরিচালন কমিটির আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়ার যুগ্ম সম্পাদক এস এম ইয়াসিন বলেছেন, 'প্রতিবেদনের গোপনীয়তা এবং কমিশন এখন আর ভালোভাবে সুরক্ষিত নয়। আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত। রিপোর্ট প্রকাশ্যে ফাঁস হওয়ায় জ্ঞানবাপী মসজিদ ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এটির দিকে নজর দেওয়া উচিত এবং এর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।'

মসজিদ পরিচালনা কমিটির কৌঁসুলি রইস আহমেদ বলেন, 'অনুষ্ঠানিকভাবে যে রিপোর্ট আসছে তা অনুপযুক্ত। আদালত ও প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে জবাবদিহি নির্ধারণ করা।' আহমেদ জানান, প্রতিবেদনের অনুলিপি পেতে তিনি আদালতে আবেদন করবেন।

মিশ্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, একটি শিলাপট্টে চারটি মূর্তির আকৃতি দেখা গেছে এবং সেটি ছিল ‘গেরুয়া’ রঙের। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাটিতে পড়ে থাকা সমস্ত ফলক একটি বিশাল ভবনের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই ফলকের কিছু নকশা মসজিদের পশ্চিম দিকের দেয়ালের নকশার মতই।

মামলার আবেদনকারীরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া মূর্তিগুলো শ্রিংগার গৌরী মন্দিরের 'চৌখাত' এর অবশিষ্টাংশ।

আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ, বারাণসীর ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিনিধিত্বকারী সিনিয়র অ্যাডভোকেট হুজেফা আহমাদি, যিনি আপিল দায়ের করেছিলেন, বলেছেন যে- 'স্থগিতাদেশে কোনও আপত্তি নেই, তবে একমাত্র আশঙ্কা হল যে ওয়াজুখানার কাছে একটি প্রাচীর ভেঙে ফেলার জন্য আবেদন করা হয়েছে।'

১৭ মে সুপ্রিম কোর্ট, বারাণসী আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করতে অস্বীকার করার সময়, বারাণসী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মসজিদ এলাকার ভিডিওগ্রাফিক সমীক্ষার সময় যেখানে একটি শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছিল সেখানটি সুরক্ষিত করতে বলেছিল। তবে, তা মুসলমানদের মসজিদে প্রবেশ ও নামাজ পড়ার অধিকার কেড়ে নিয়ে নয়।

Read in English

supreme court uttar pradesh gyanvapi mosque
Advertisment