'ন্যায় প্রতিষ্ঠা পেল।' ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের চার অপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের পর টুইটে প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রী মোদীর।
শুক্রবার টুইটে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'ন্যায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। নারীর মর্যাদা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার পক্ষে এই পদক্ষেপ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নারী শক্তি সর্বক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। একযোগে কাজ করে আমাদের এমন একটি দেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে নারী ক্ষমতায়নের দিকে মনোনিবেশ করা হবে, যেখানে সমতা এবং সুযোগকে আগ্রাধিকার দেওয়া হবে।'
Justice has prevailed.
It is of utmost importance to ensure dignity and safety of women.
Our Nari Shakti has excelled in every field. Together, we have to build a nation where the focus is on women empowerment, where there is emphasis on equality and opportunity.
— Narendra Modi (@narendramodi) March 20, 2020
শুক্রবারই নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডের চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় নির্ভয়ার চার ধর্ষক মুকেশ সিং, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিংকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডে আদেশ মুকুবের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে নির্ভয়ার অপরাধীরা। ফলে মৃত্যুদণ্ডের চতুর্থ পরোয়ানা কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছিল। তবে, ভোররাতেই দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, শুক্রবারই হবে ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্তদের ফাঁসি। সেই মত রাতেই তিহার জেলের সামনে হাজির হয়ে যান নির্ভয়ার মা সহ অ্যান্যরা।
ভোর পাঁচটা চল্লিশ। জেলের মধ্যে থেকে ফাঁসি কার্যকরের খবর আসতেই আশাদেবীর চোয়াল শক্ত। বললেন, ‘আজ আমি মেয়ের ছবি জড়িয়ে ধরে ওকে একটাই কথা বলেছি। অবশেষে তুই ন্যায়বিচার পেলি।’ তাঁর সংযোজন, ‘সাত বছরের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই। শেষ পর্যন্ত ওরা (নির্ভয়াকাণ্ডের চার অপরাধী) ফাঁসিতে ঝুলেছে। আমরা বিচার পেলাম। এই দিনটি দেশের সব মেয়েদের জন্য উৎসর্গীকৃত।’ ন্যায়বিচারের জন্য এদিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানান নির্ভয়ার আশাদেবী। তিনি বলেন, ‘ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছিল, কিন্তু তাকে অস্বীকার করা যায়নি।’ আশাদেবীর আর্জি, ‘নির্ভয়ার বিচার পেতে সাত বছর তিন মাস সময় লাগল। ভবিষ্যতে বিচার প্রক্রিয়া যাতে আরও দ্রুত ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় সেই এই মর্মেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করব’।
আরও পড়ুন: ‘শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পেলাম’
গত সোমবার মৃত্যুদণ্ড রদ করার আবেদন নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি প্রার্থনা করে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের দ্বারস্থ হয় নির্ভয়ার চার অপরাধীর তিন জন।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে একটি বাসে করে বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন প্যারামেডিক্যালের ছাত্রী। চলন্ত বাসে বছর ২৩-য়ের ওই পড়ুয়াকে নৃশংস অত্যাচার করে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। রড দিয়ে অত্যাচার করা হল। মারধর করা হয় নির্যাতিতার বন্ধুকেও। শেষে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় দু’জনকেই। প্রথমে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও নির্য়াতিতার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শেষ পর্যন্ত ২৯ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ওই পড়ুয়ার।এই ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় বাসের চালক রাম সিং, মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্তা, অক্ষয় সিংকে। তালিকায় ছিল এক নাবালক অপরাধীও।
এই মামলার গুরুত্ব অনুশারে গঠন করা হয়ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। সেখানেই চলে শুনানি। ২০১৩ সালেই, ১০ সেপ্টেম্বর ধৃত ৬ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। তার মধ্যেই জেলে আত্মহত্যা করে ধৃত রাম সিং। এই মামলার নাবালক অপরাধীকে তিন বছরের সাজা দেয় জুভেনাইল কোর্ট । ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বাকি ৪ অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে সেই আদেশই শুক্রবার কার্যকর হল। ফাঁসিতে ঝোলানো হল নির্ভয়া গণধর্ষণের চার অপরাধীকে।
Read the full story in English