আদালতে জামিন মঞ্জুর সত্বেও বন্দির কারাগার মুক্ত হওয়া সম্ভব হল না। এই ধরণের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। জামিন মঞ্জরের নির্দেশনামা কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছতে বিলম্বের জেরেই এই হয়রানি। যাকে 'গুরুতর ঘাটতি' বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এর ফলে বন্দির মানবিক স্বাধীনতা খর্ব হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিচারপতির মতে, এই বিলম্ব যুদ্ধকালীন তৎপরায় সমাধান করার প্রয়োজন রয়েছে।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের ভার্চুয়াল কোর্ট ও ই-সেবা পরিষেবার উদ্বোধনে গিয়ে কোর্ট থেকে জামিন আদেশের যোগাযোগে বিলম্বের কথা তুলে ধরেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছেন, 'ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিনের নির্দেশ কারাগারে পৌঁছানোয় বিলম্বের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর ঘাটতি। যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে এর সমাধান প্রয়োজন। কারণ এটা বিচারাধীন ও দোষী- যার সাজা ঘোষণা স্থগিত রয়েছে- এমন বন্দিদের মানবিক স্বাধীনতার সঙ্গে সংযুক্ত। '
সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে মাদককাণ্ডে ধৃত শাহরুখ খান-পুত্র আরিয়ানের ক্ষেত্রেও। তাঁর জামিন মঞ্জুর হওয়ার পরও বেশ কয়েকদিন আরিয়ানকে জেলে কাটাতে হয়েছে। আদালতের নির্দেশ জেলে না এসে পৌঁছানোয় এই পরিস্থিতি বলে জানিয়েছিল কারা কর্তৃপক্ষ।
এইধরণের ঘটনায় অসন্তুষ্ট বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সমাধান হিসাবে 'নিরাপদ, বিশ্বাসযোগ্য এবং প্রমাণ্য' এক মাধ্যমের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, 'ডিজিটাল যুগেও কোর্ট থেকে নির্দেশনামা কারাগারে পৌঁছাতে আমরা পায়রার জন্য আকাশের দিকে তারিয়ে রয়েছি।'
বিলম্ব ঘাটতি সমাধানে সুপ্রিম কোর্ট একটি প্রকল্প বাস্তবায়ণের নির্দেশ দিয়েছিল। যার নাম- ফার্স্ট অ্যান্ড সিকিওর ট্রান্সমিশন অফ ইলেকট্রনিকস রেকর্ডস (FASTER)। দ্রুত যোগাযোগ ও নির্দেশ সমুহ তাড়াতাড়ি কার্যকর করবে এই ব্যবস্থা। এই প্রকল্প ভালো করে বাস্তবায়িত করতে কোর্টে ভালো ইন্টারনেট ব্যবস্থা কার্যকর করতে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
পাশাপাশি ওড়িশা হাইকোর্টের ই-কাস্টডি ব্যবস্থা চালুরও কথা বলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এর ফলে কোনও মামলার গতিপ্রকৃতি, বন্দির পরিচয়, মামলা সংক্রান্ত সব নথি, কোর্টের রায় নিমেষে জানা যাবে। ফলে কোনও বন্দিকেই আর জামিনের পর জেলে থাকতে হবে না। কোর্টের জামিন রায় দ্রুত কার্যকর করা যাবে।
দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির জন্য ভার্চুয়াল কোর্টের প্রয়োজনীতার কথাও মেনে নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এি বিচারপতি।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন