শ্রদ্ধা ওয়াকার (২৭) হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকে (২৮) আরও চার দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্টেটের বিচারক অভিরাল শুক্লা। আফতাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ১৮ মে মেহরৌলির ফ্ল্যাটে লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে খুনের পর দেহটি ৩৫ টুকরো করেছিল। সেই টুকরোগুলো ফ্রিজে রেখে পরের তিন মাস ধরে ছড়িয়ে দিয়েছিল ছত্তরপুর-সহ দিল্লির বিভিন্ন জায়গায়। অভিযুক্তকে মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আদালতে হাজির করানো হয়।
অভিযুক্তের আইনজীবী অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সময়েই তাঁর মক্কেলের শুনানি হয়েছে। নিরাপত্তার কথা ভেবেই ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি হয়েছে। শুনানির সময় বিচারক প্রশ্ন করেন, তদন্তের সময় তার সঙ্গে কোনওরকম দুর্ব্যবহার করা হয়েছে কি না? জবাবে আফতাব জানায়, সে তদন্তে সবরকম সাহায্য করছে। তাই দুর্ব্যবহারের ব্যাপার নেই।
একইসঙ্গে আফতাব জানিয়েছে, সে বা তার পরিবার কোনও ব্যক্তিগত আইনজীবী ঠিক করেনি। তাই আইনি সহায়তার অধিকার থেকে যে আইনজীবীকে সে পেয়েছে, তাকে নিয়েই খুশি। সূত্রের খবর, আদালতে পুনাওয়ালা জানিয়েছে, সে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে শ্রদ্ধাকে হত্যা করেছে। যদিও তার আইনজীবী অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, আদালতে খুনের দায় নেয়নি আফতাব।
সূত্রের খবর, আদালতে সরকার পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, সম্প্রতি মেহরৌলির জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। সেখান থেকে খুলির একাংশ, কাটা কবজি এবং হাঁটুর অংশ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেসব শ্রদ্ধার কি না, জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ দাবি করেছে, গুগল সার্চ করে মানবদেহ টুকরো করে কাটা এবং রক্তের দাগ পরিষ্কারের পদ্ধতি খুঁজেছিল আফতাব। এজন্য সে কতবার গুগল সার্চ করেছিল, তার সংখ্যাও প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশ।
যদিও একইসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, হোটেল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে লেখাপড়া করেছিল আফতাব। কয়েক বছর আগে শেফ হিসেবেও কাজ করত। মাংস কাটার জন্য দু'সপ্তাহের প্রশিক্ষণও নিয়েছিল। এত অভিজ্ঞকে কেন গুগল সার্চ করে মানবদেহ কাটার পদ্ধতি শিখতে হল, সেই প্রশ্নে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন- ‘বিরাট বিপর্যয়ের মুখে পঞ্চায়েত দফতরগুলি’, আধিকারিকের চিঠি সামনে এনে তোলপাড় ফেললেন শুভেন্দু
এর মধ্যেই মঙ্গলবার আফতাবের দিল্লির ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ফ্ল্যাটের বাথরুম এবং রান্নাঘরের টাইলস সরিয়ে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলেই পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রদ্ধাকে হত্যার ঘটনার পর আরও ছয় মাস কেটে গিয়েছে। তার জন্যই আফতাবের ফ্ল্যাটে রক্তের চিহ্ন মেলেনি। তাই বাথরুম এবং রান্নাঘরের বাথরুমের টাইলস সরিয়ে রক্তের দাগ খোঁজার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। সেই চেষ্টায় আপাতত সাফল্য মিলল।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এক অনলাইন ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবের আলাপ হয়েছিল। পরবর্তীতে দু'জনেই মুম্বইয়ে একই কলসেন্টারে কাজ করে। ভিনধর্মের হওয়ায় তাদের সম্পর্ক মানতে পারেনি পরিবার। এই পরিস্থিতিতে আফতাবের সঙ্গে মুম্বই ছেড়েছিল শ্রদ্ধা। তারা চলে আসে দিল্লিতে।
Read full story in English