'শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পেলাম।' নির্ভয়ার চার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ঘোষণার পর পরই তিহার জেলের সামনে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করলেন নির্যাতিতার মা আশাদেবী।
বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডে আদেশ মুকুবের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে নির্ভয়ার অপরাধীরা। ফলে মৃত্যুদণ্ডের চতুর্থ পরোয়ানা কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছিল। তবে, ভোররাতেই দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, শুক্রবারই হবে ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্তদের ফাঁসি। সেই মত রাতেই তিহার জেলের সামনে হাজির হয়ে যান নির্ভয়ার মা সহ অ্যান্যরা।
ভোর পাঁচটা চল্লিশ। জেলের মধ্যে থেকে ফাঁসি কার্যকরের খবর আসতেই আশাদেবীর চোয়াল শক্ত। বললেন, 'আজ আমি মেয়ের ছবি জড়িয়ে ধরে ওকে একটাই কথা বলেছি। অবশেষে তুই ন্যায়বিচার পেলি।' তাঁর সংযোজন, 'সাত বছরের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই। শেষ পর্যন্ত ওরা (নির্ভয়াকাণ্ডের চার অপরাধী) ফাঁসিতে ঝুলেছে। আমরা বিচার পেলাম। এই দিনটি দেশের সব মেয়েদের জন্য উৎসর্গীকৃত।'
আরও পড়ুন: নির্ভয়ার চার ধর্ষকের ফাঁসি কার্যকর
ন্যায়বিচারের জন্য এদিন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও কেন্দ্রীয় সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানান নির্ভয়ার আশাদেবী। তিনি বলেন, 'ন্যায়বিচার বিলম্বিত হয়েছিল, কিন্তু তাকে অস্বীকার করা যায়নি।' আশাদেবীর আর্জি, 'নির্ভয়ার বিচার পেতে সাত বছর তিন মাস সময় লাগল। ভবিষ্যতে বিচার প্রক্রিয়া যাতে আরও দ্রুত ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় সেই এই মর্মেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করব'।
শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচাটায় নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডের চার অপরাধী মুকেশ সিং, পবন গুপ্তা, বিনয় শর্মা, অক্ষয় কুমার সিংয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। চতুর্থ বারের পরোয়ানায় নির্ভয়ার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর হল। এর আগে তিনবার সেই নির্দেশ দেওয়া হলেও আইনি সংস্থানের কথা বলে নানান টালবাহানায় ফাঁসির তারিখ পিছিয়েছে। আশঙ্কা ছিল, ফের কোনও আইনি ফাঁক বার করে এবারও সেই সুযোগ অপরাধীরা নিতে পারে কিনা- তা নিয়েই। বৃহস্পতিবার রাতেও চার অপরাধীর তিনজন দিল্লি হাইকোর্টে ফাঁসি মুকুবের আর্জি জানায়। রাতেই চলে শুনানি। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের ফাঁসির আদেশই বহাল রাখে হাইকোর্ট। নৃশংস ঘটনার সাত বছর পর শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হল ২০১২ দিল্লি গণধর্ষণকাণ্ডের চার অপরাধীর।
Read the full story in English