School Reopen: পয়লা নভেম্বর থেকে দিল্লিতে খুলছে সব স্কুল। এতদিন উচ্চমাধ্যমিক অর্থাৎ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলেছে। এবার মাস ঘুরলেই প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক এবং মাধ্যমিক, সব স্তরে স্কুল খুলতে উদ্যোগ নিল কেজরিওয়াল সরকার। গত বছর মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণের কারণে বন্ধ হয়ে যায় সেই রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চলতি বছর জানুয়ারিতে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি খুলে দেয় দিল্লি সরকার। কিন্তু দ্বিতীয়ও ঢেউয়ের বাড়বাড়ন্ত হওয়ায় এপ্রিলে ফের বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস রুম।
ফের গত পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে চালু হয় উচ্চমাধ্যমিক ক্লাসরুম। কিন্তু প্রায় দেড় বছর বন্ধই থাকে নিচু শ্রেণির ক্লাসরুম। সেই ক্লাসরুম খুলতেই বড় সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে কোভিড এসওপি মেনেই স্কুলগুলো খুলবে। এদিন জানান শিক্ষামন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া।
এদিকে, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও কোভিড সংক্রমণ হচ্ছে। তাতে চিন্তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তা হলে কি ভ্যাকসিন কোভিড আটকাতে পারছে না, সেই গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন। দেখা গিয়েছে, কোভিড আক্রান্তের ২০ শতাংশের শরীরে রয়েছে প্রতিষেধক। কেন্দ্রকে চিঠি লেখার জন্য স্বাস্থ্যসচিবকে বলেও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। না, আমাদের রাজ্য, কিংবা এই সুজলাং সুফলাংয়েই শুধু নয়, সারা পৃথিবীতে প্রতিষেধক ফোটানো অনেককেই করোনা কামড় দিয়েছে। ফলে মাথা চুলকোতে হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। তা হলে কি ড্রাগন ধরার যে ফাঁদটি তৈরি করা হয়েছে, তা ঠুকনো?
তবে, স্বস্তির কথাটা হল, টিকা নেওয়া-দের করোনায় মৃত্যুর হার অনেক কম। এবং অনেকের উপসর্গই দেখা যাচ্ছে না কোনও। মানে, গাল-ভরা সেই কথাটা– অ্যাসিমটোম্যাটিক বা উপসর্গহীন তাঁরা। এখনেও অবশ্য একটা সমস্যা রয়েছে। কারণ, অ্যাসিমটোম্যাটিকরা তো নিজের ও চারদিকের অজান্তে করোনা ছড়িয়ে দিতে কোনও কার্পণ্য করবে না। তা হলে?
কয়েক দিন আগেই খবর হয়েছে, ১০০ কোটি ভ্যাকসিনের ডোজ দেওয়া হয়েছে এ দেশে। এর আগে একমাত্র রয়েছে চিন। জুন মাসে চিন এই সংখ্যাটা পেরিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেবে ভ্যাকসিনের ১০০ কোটি– ৩টি জার্মানি, ১১টি ফ্রান্স, ১০টি ইংল্যান্ড, ৫টি রাশিয়া, ১৮টি কানাডার সমান। যদিও বছরের শেষে এ দেশের যোগ্য জনসংখ্যার মাত্র ৩০ শতাংশকেই পুরোপুরি ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। আর টার্গেট রয়েছে ৬০ শতাংশ। এবং প্রাপ্তবয়স্ক জনসমুদ্রের ৭০ শতাংশই একটি ডোজ পেয়েছেন এখনও। এ সব কিছুই এই বিরাট সাফল্যের নীচে অন্ধকার তৈরি করে রেখেছে। তা ছাড়া রয়েছে দুটি ডোজের মধ্যে ফারাক-পরিসংখ্যানের কাঁটাও।
ব্লুমবার্গের ট্র্যাকার বলছে, চিনের ৮২ শতাংশ অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন, ৭৬ শতাংশ নিয়েছেন দুটি। অনুপাত হল– ১.১। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন ৬৬.২ শতাংশ, দুটিই নিয়েছেন ৫৭.৩ শতাংশ। অনুপাত ১.১৫। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলি মিলিয়ে হিসেবটা হল– অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন ৬৯ শতাংশ, দুটিই নিয়েছেন ৬৬ শতাংশ। ভারতে এই গ্যাপটি দ্বিগুণের বেশি। এখানে অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন ৫১ শতাংশ, দুটি নিয়েছেন ২১.৯ শতাংশ। এর কারণ আর কিছুই নয়, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মধ্যেকার সময়সীমা। এখানে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ, পৃথিবীতে যা সবচেয়ে বেশি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও কোভিডের কামড়– তাতে এ দিকেও নজর পড়েছে, কাটাছেঁড়া করা হচ্ছে। বাড়তি গ্যাপের মধ্যে ভূতটা ঢুকে বসে নেই তো?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন