লকডাউনের পর আপাতত স্থিতিশীল দিল্লির করোনা পরিস্থিতি। লকডাউন আটকেছে রাজ্যের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ। এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। ফলে অক্সিজেনের চাহিদা কিছুটা কমেছে দিল্লিতে। তবে, জোগান চালু থাকায় জমেছে কিছু উদ্বৃত্তও। সেই অক্সিজেন অভাবী রাজ্যগুলিকে দিয়ে সাহায্য করতে চায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশাসন। বৃহস্পতিবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া এই ঘোষণা করেছেন। তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, দিল্লিতে করোনা গ্রাফ কমের দিকেই।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১০ হাজার ৪০০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে দিল্লিতে। যা আগের দিনের পরিসংখ্যানের থেকে ২১ শতাংশ কম। সংক্রমণের হারও বেশ কিছুটা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৪ শতাংশে। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দিল্লির পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন দিল্লি হাই কোর্ট এবং কেন্দ্রকে।
বৃহস্পতিবার দিল্লির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠকে মণীশ বলেন, ‘অক্সিজেনের চাহিদা এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। হাসপাতালের শয্যাও ফাঁকা হচ্ছে ক্রমশ। ১৫ দিন আগেও দিনে ৭০০ মেট্রিক টন অক্সিজেনের দরকার পড়ছিল আমাদের। এখন চাহিদা কমে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৫৮২ মেট্রিক টনে।’ কেন্দ্রকে বিষয়টি একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছে দিল্লি প্রশাসন। একইসঙ্গে অনুরোধ করেছে, দিল্লির জন্য বরাদ্দ অক্সিজেনের উদ্বৃত্ত যেন সেই সব রাজ্যকে দিয়ে সাহায্য করা হয়, যেখানে এখনও ঘাটতি রয়েছে।
এদিকে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে দুটি ডোজের মধ্যে ১২-১৬ সপ্তাহের ব্যবধান হওয়া দরকার। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করল কেন্দ্রকে। তবে কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে দুটি ডোজের ব্যবধান অপরিবর্তিতই থাকছে। পাশাপাশি, টিকাকরণ সংক্রান্ত জাতীয় উপদেষ্টা গোষ্ঠী আরও জানিয়েছে, গর্ভবতী মহিলারাও টিকা নিতে পারবেন এবার থেকে। বর্তমানে ঝুঁকির কারণে তাঁরা টিকা নিতে পারছিলেন না।
এছাড়াও সরকারি প্যানেল জানিয়েছে, করোনামুক্ত হওয়ার পর টিকা নিলে অন্তত ছয় মাস পর প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কোভিড বিধি অনুযায়ী, বর্তমানে করোনামুক্ত হওয়ার চার থেকে ৮ সপ্তাহ পর টিকা নেওয়া উচিত এবং গর্ভবতী এবং প্রসূতিরা টিকা নিতে পারবেন না। এদিনের নয়া সুপারিশ টিকা নীতির জাতীয় বিশেষজ্ঞ দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের অনুমোদন পেলেই নতুন নিয়মে টিকাকরণ শুরু হবে।
এই নিয়ে তিন মাসে দ্বিতীয়বার কোভিশিল্ডের ডোজের ব্যবধান বাড়ানো হল। গত মার্চে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়, দুটি ডোজের মধ্যে ব্যবধান ২৮ দিন থেকে ৬-৮ সপ্তাহ করতে হবে। এতে ভাল ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু এবার ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ।