বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শাহনওয়াজ হুসেনকে রক্ষাকবচ দিতে অস্বীকার হাইকোর্টের। আদালত দিল্লি পুলিশকে অবিলম্বে মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে হুসেনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি তিন মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। ২০১৮ সালে, দিল্লির এক মহিলা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হুসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। তারই পরিপ্রেক্ষিপ্তে আদালতের এদিনের এই রায়।
ধর্ষণের মত মারাত্মক অপরাধের ক্ষেত্রে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গড়িমসি করায় হাইকোর্টের তীব্র ভৎসর্ণার মুখে দিল্লি পুলিশ। পাশাপাশি হাইকোর্টের কড়া নির্দেশ আগামী তিনমাসের মধ্যে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সৈয়দ শাহনওয়াজ হুসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার দিল্লি হাইকোর্টের তরফে এক নির্দেশ হয়। যাতে বলা হয় ২০১৮ সালের এপ্রিলে দক্ষিণ দিল্লির ছাতারপুরে ধর্ষণের অভিযোগে বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেনের বিরুদ্ধে "অবিলম্বে" এফআইআর দায়ের করতে হবে এবং আগামী তিনমাসের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
পুলিশকে তিন মাস সময় দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে যে অভিযোগকারিণী চারবার তার বক্তব্য রেকর্ড করেছেন, "কিন্তু কেন এফআইআর দায়ের করা হয়নি তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি”। আদালত বলেছে, এর থেকে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে মামলা দায়ের করতে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ অনীহা রয়েছে। বিচারপতি আশা মেনন উল্লেখ করেন, "তদন্তের পরই পুলিশ এই সিদ্ধান্তে আসতে পারে যে একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কিনা এবং যদি হয়, তাহলে কার দ্বারা সেটি সংগঠিত হয়েছে”।
আরও পড়ুন: < চাকরি নিয়ে বিরাট ‘প্যাঁচে’ কেষ্ট কন্যা, সঙ্গে পাঁচ ঘনিষ্ঠও, আজ তলব হাইকোর্টে >
দিল্লির ওই মহিলা আদালতে মামলা নথিভুক্ত করার আবেদন জানান। তিনি হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের এফআইআর দায়ের করার জন্য ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নিম্ন আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন। ওই মহিলার অভিযোগ, হুসেন তাঁকে ছতরপুরের খামার বাড়িতে ধর্ষণ করেন এবং তাঁকে হত্যার হুমকি দেন। নিন্ম আদালত তার রায়ে, হুসেনের বিরুদ্ধে ৩৭৬/৩২৮/১২০/৫০৬ ধারার অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করারর নির্দেশ দেয়। যদিও তার পরেও দিল্লি পুলিশের গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে এদিন বিচারপতি আদালতে দিল্লি পুলিশকে তীব্র ভৎসর্না করেন।
দিল্লি হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শাহনওয়াজ হুসেনের পিটিশন খারিজ করেছে। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি আশা মেননের একটি বেঞ্চ আপিল পিটিশনকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করে আদেশ দিয়েছে যে অবিলম্বে একটি এফআইআর দায়ের করা উচিত এবং এই বিষয়ে তদন্ত করা উচিত। এ ব্যাপারে পুলিশের মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত। ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত করার ট্রায়াল কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতা হুসেনের আপিলকে ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দিয়ে আদালত এই মন্তব্য করেছে।