অক্সিটোসিন বিক্রিতে আর কোনও বাধা রইল না। অক্সিটোসিন বিক্রি নিয়ে বেসরকারি কোম্পানিতে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেই নিষেধাজ্ঞা এদিন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। অক্সিটোসিন বিক্রিতে কেন্দ্রের পদক্ষেপের "কোনও যৌক্তিকতা নেই" বলে এদিন মন্তব্য করে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট ও বিচারপতি এ কে চাওলার বেঞ্চ জানায়, অক্সিটোসিন উৎপাদন ও বিক্রিতে বেসরকারি কোম্পানিগুলির উপর সরকার যে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে, তার "কোনও বৈজ্ঞানিক যুক্তি" নেই। এদিনের রায়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রের নির্দেশ "খামখেয়ালি ও অযৌক্তিক"।
আরও পড়ুন: প্রক্রিয়া সন্তোষজনক, রাফালে চুক্তিতে হস্তক্ষেপ নয়: সুপ্রিম কোর্ট
অক্সিটোসিন কী? যৌন সংসর্গ, প্রসবের সময়, কিংবা স্তন্যপানের সময় পিটুইটারি গ্রন্থী থেকে নিঃসৃত হয় অক্সিটোসিন। যা 'লাভ হরমোন' নামেও পরিচিত। অক্সিটোসিনকে রাসায়নিক ভাবে প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করে থাকে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। প্রসবের সময় এটি বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়, কারণ প্রসবের সময় রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা থাকে। যে কোনও ওষুধের দোকানে ৩ থেকে ২০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায় অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অক্সিটোসিন উৎপাদন ও বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল শুধুমাত্র কর্নাটক অ্যান্টিবায়োটিকস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটড নামক সংস্থাকে। অক্সিটোসিন নিয়ে বেসরকারি কোম্পানিগুলির উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বেড়ে হয় ১৫ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের অক্টোবরে স্বাস্থ্যমন্ত্রকে চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় শিশু ও নারী কল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গান্ধী জানান, বেআইনি ভাবে যথেচ্ছ হারে অক্সিটোসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, কৃষক ও ডেয়ারি মালিকরা ব্যাপক হারে অক্সিটোসিনের অপব্যবহার করছেন। এর জেরে শুধু যে পশুদের শরীরে প্রভাব পড়বে তাই নয়। সবজি ও দুধেও যেভাবে অক্সিটোসিনের প্রবেশ ঘটছে, তাতে মানবদেহেও তার মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়বে। এমনকি অক্সিটোসিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার স্তন ক্যান্সার, গর্ভাশয়ের ক্যান্সারের মতো মারণরোগ ডেকে আনতে পারে। এরপরই অক্সিটোসিনের অপব্যবহার ঠেকাতে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
Read the full story in English