বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ কি না, সেই মামলায় বুধবার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ল দিল্লি হাইকোর্ট। মামলাটি বিচারপতি রাজীব শাকধের ও বিচারপতি সি হরিশংকরের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানে বিচারপতি রাজীব শাকধের মত প্রকাশ করেন যে অনিচ্ছাপূর্বক স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারায় পড়া উচিত। আর, বিচারপতি সি হরিশংকরের দাবি, এটা সংবিধানের ১৪, ১৯ এবং ২১ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করেনি। তবে, বিষয়টি অপরাধ কি না, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও উভয় বিচারপতিই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ছাড়পত্র আবেদনকারীদের দিয়েছেন।
বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ কি না, বিষয়টি ২০১৫ সাল থেকে আদালতে বিচারাধীন। আরআইটি ফাউন্ডেশন এবং অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক ওমেনস অ্যাসোসিয়েশন এই মামলার মুখ্য আবেদনকারী। মামলাটি ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মুলতুবি ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার এই মামলায় উত্তর দেওয়ার জন্য আরও সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু, কেন্দ্রের সেই অনুরোধ বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে ৭ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় সরকারকে দুই সপ্তাহের জন্য সময় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রদ্রোহ আইন কী, কেন দরকার পড়ল সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশিকার
দুই 'আদালত বন্ধু' রেবেকা জন ও রাজশেখর রাও জানিয়েছেন, নারীর শরীর একান্তই তাঁর নিজস্ব। তাঁর অনিচ্ছাতেও বহুবার সহবাস হয়। এই সব কারণে বিবাহিত নারী নিজের ধর্ষণকে ধর্ষণ বলতে ভুলে গেছে। সহবাসের ক্ষেত্রে নারীর সম্মতির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন বলেই তাঁরা মত প্রকাশ করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার আবার মনে করছে, ৪৯৮এ ধারার যেভাবে অপব্যবহার হয়েছে, সেভাবেই বৈবাহিক ধর্ষণকে স্বীকৃতি দিলে বিয়ে নামের প্রতিষ্ঠানটাই ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হবে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, সবার সঙ্গে কথা না-বলে বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলার ব্যাপারে তাদের মত নেই। মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও লোকসভায় জানিয়েছেন, নারী এবং শিশুকে রক্ষা করা কর্তব্য। কিন্তু, সব পুরুষকেই ধর্ষক বলা যায় না। দুই বিচারপতির মতপার্থক্যের জন্যে মামলাটি তিন সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা যাবে বলেই জানিয়েছে আদালত।
Read story in English