অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীদের গুলিতে মারাত্মক জখম হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন,সাড়ে ছয় বছরের রোলি প্রজাপতি। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (AIIMS) স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে একরত্তি মেয়েটি।
হাসপাতালের তরফে শিশুটির ব্রেন ডেড ঘোষণা করা হয়। এর পরেও শিশুকন্যাটি বেঁচে রয়েছেন, বেঁচে রয়েছেন আর পাঁচ জনের মধ্যে। তার দেওয়া অঙ্গ প্রাণ বাঁচিয়েছে আরও পাঁচ শিশুর। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস’র সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গ দাতা হিসাবে উঠে এসেছে তার নাম। শিশুর পরিবারের এমন মহানুভবতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস’র চিকিৎসকরা।
ঠিক কী ঘটেছিল? এইমসের সিনিয়র নিউরোসার্জন ডাঃ দীপক গুপ্তা বলেন, গত ২৭ এপ্রিল সাড়ে ছয় বছর বয়সী রোলি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার মস্তিষ্কে একটি গুলি লেগেছিল। গুলির আঘাতে মস্তিষ্কের ভিতরের অংশ সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিয়েও শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: ভোররাতে শহরে বিধ্বংসী আগুন, লক্ষ-লক্ষ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা
ব্রেন ডেড ঘোষণার পরে চিকিৎসকরা তার বাবা-মাকে অঙ্গ দানের অনুরোধ করেন। রাজী হন শিশুটির বাবা-মা। লিভার, কিডনি, কর্নিয়া এবং হার্টের ভালভ দান করে আরও পাঁচটি শিশুকে সুস্থ করে তোলে এইমসের চিকিৎসকরা। হাসপাতালের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গ দাতা হয়ে ওঠেন রোলি। ডাঃ গুপ্তা বলেন “রোলির বাবা-মায়ের এমন আত্মত্যাগের জন্য আমরা ওনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা জীবনের গুরুত্ব বুঝেছিলেন”।
রোলির বাবা হরনারায়ণ বলেন, ‘ডাঃ গুপ্তা আমাদের অঙ্গ দানের ব্যাপারে বুঝিয়েছিলেন। আমরা তো আমাদের মেয়েকে আর ফিরে পাব না। সে বেঁচে থাকবে আরও পাঁচটি শিশুর মধ্যে’। মা পুনম দেবী চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘অন্যদের মধ্যে আমি আমার হারানো মেয়েকে খুঁজে পাব। এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে’!