ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (এমএসপি) সহ কৃষি সংক্রান্ত একাধিক দাবি নিয়ে কৃষকরা আবারও রাজধানী দিল্লি ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কৃষকরা ঘোষণা করেছে যে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং তাদের ন্যায্য দাবিগুলি নিয়ে আলোচনা করতে ১৩ ফেব্রুয়ারি 'দিল্লি চলো' পদযাত্রা শুরু করবে। পাঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরা আন্দোলনের জন্য দিল্লির উদ্দেশ্যে জড়ো হচ্ছেন। এদিকে আন্দোলনের আগেই হরিয়ানা থেকে দিল্লি পর্যন্ত সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
২০২০-২০২১ সালে রাজধানী দিল্লি কৃষকদের একটি বিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে। সেই বিক্ষোভ টানা এক বছর ধরে চলেছিল। এবারের আন্দোলনের আঁচ যাতে দিল্লিতে না পড়ে তার জন্য কোমর বেঁধে আসরে নেমেছে পুলিশ-প্রশাসন। দিল্লির সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা সিল করে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি চলো ঘোষণা করেছে ইউনাইটেড কিসান মোর্চা (অরাজনৈতিক) এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা। এই দুটি সংগঠনই দু'শো কৃষক ইউনিয়নের সঙ্গে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। সংগঠনের অধিকাংশই পাঞ্জাব-হরিয়ানার। এই কারণেই 'দিল্লি চলো' পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী কৃষকরাও এই দুই রাজ্যের।
কৃষকরা সরকারের কাছে দাবি করেছেন যে সরকারকে এমএসপির আইনি গ্যারান্টি দিতে হবে। কৃষকদের পেনশন সুবিধা ও ফসল বীমা সুবিধাও দিতে হবে। কৃষকরা ২০২০ সালে বিক্ষোভের সময় যা দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলি তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। কৃষকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব কৃষিক্ষেত্রে স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা হোক। লখিমপুর সহিংসতার শিকারদের বিচারের দাবিও উঠেছে।
আরও পড়ুন : < Abu Dhabi temple: আবুধাবিতে প্রথম হিন্দু মন্দির, উদ্বোধনে মোদী, দু’দেশের সম্পর্কের নয়া মোড় >
'দিল্লি চলো' পদযাত্রার কথা মাথায় রেখে রাজধানী দিল্লিকে দুর্গে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। হরিয়ানা থেকে উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত সীমান্তে টহল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশ গাজিপুর বর্ডার, টিকরি বর্ডার এবং সিংগু বর্ডারে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতেও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে দিল্লির সংযোগকারী তিনটি প্রধান সীমান্তেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
শুধু গাজিপুর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি, RPF জওয়ানদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ ইতিমধ্যেই এখানে উপস্থিত রয়েছে। দিল্লির পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরা সিংগু বর্ডারে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। ড্রোনের মাধ্যমেও পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে, কৃষক বিক্ষোভের জেরে প্রবল অস্বস্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের আন্দোলন প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কিছু কৃষক সংগঠনকে আলোচনার জন্য বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ইউনাইটেড কিষাণ মোর্চা (অরাজনৈতিক) আহ্বায়ক জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল এবং কিষাণ মজদুর মোর্চা (কেএমএম) এর আহ্বায়ক সারওয়ান সিং পান্ধেরকে এই বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫ টায় চণ্ডীগড়ের মহাত্মা গান্ধী স্টেট ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (MAGSIPA) একটি বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। এতে কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই সহ তিন সদস্যের কেন্দ্রীয় দল এতে অংশ নেবেন।