লালকেল্লার হিংসার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। তাকে ওয়ান্টেড চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। পিটিআই সুত্রে এমনটাই খবর। দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (স্পেশাল সেল) সঞ্জীব যাদব বলেন, ‘ইকবাল সিংয়ের খোঁজে ৫০ হাজার টাকা পুরষ্কার মুল্য ধার্য করা হয়েছিল। পাঞ্জাবের হোসিয়ারপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।‘ অভিযোগ, ইকবাল সিংয়ের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। সেই ভিডিওতে ইকবাল সিং পুলিশকে হুমকি আর বিক্ষোভকারীদের হিংসায় প্ররোচনা দিতে দেখা গিয়েছে।‘
লুধিয়ানা পুলিশ সুত্রে খবর, প্রায় দু’দশক ধরে ইকবাল সিং বাচিক শিল্পি হিসেবে কাজ করেন। এখন সে ধর্মীয় প্রার্থনা আয়োজন করে থাকেন।
সেই ভিডিওয় আরও দেখা গিয়েছে, ‘লালকেল্লায় কর্তব্যরত পুলিশকে ধমকের সুরে তাঁদের প্রতি গুলি চালানোর হুমকি দিচ্ছিলেন ইকবাল। এমনকি, অবিলম্বে লালকেল্লার দরজা খোলা না হলে, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হবে। তখন রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে। এমনকি, শান্তিপূর্ণ ভাবে জাতীয় পতাকা লালকেল্লা থেকে নামানো না হলে খুন-খারাপি হয়ে যাবে। এমন হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে ইকবালকে।
প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লার হিংসা বিজেপির চক্রান্ত ছিল। সোমবার সংসদে এই অভিযোগ করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। দলের সংসদীয় নেতা তথা বহরমপুরের সাংসদের প্রশ্ন, ‘প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দুষ্কৃতীরা কীভাবে লালকেল্লা পৌছতে পারল? প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন জাতীয় চাদরে মোড়া থাকে। তাহলে কীভাবে এই ঘটনা ঘটলো? আমি নিশ্চিত কেন্দ্র সরকার এই ঘটনার পিছনে। তোমরা কৃষকদের বেশে লোক পাঠিয়ে হিংসা ছড়িয়েছ।‘
সংসদে বাজেট ভাষণের পর থেকে দফায় দফায় হল্লায় মুলতুবি হয়েছে লোকসভা। এদিন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী অনুরোধ করেন লোকসভা অধিবেশন স্বাভাবিক রাখার। সেই অনুরোধকে মান্যতা দিয়ে এদিন বলতে ওঠেন অধীর চৌধুরী।
অন্যদিকে, অবশেষে কেন্দ্রের চাপে পড়ে সরকার বিরোধী, 'খলিস্তানপন্থী' কিছু অ্যাকাউন্ট বন্ধ করল টুইটার কর্তৃপক্ষ। বুধবার তারা জানিয়েছে, ভারতে কিছু অ্যাকাউন্টকে তারা বন্ধ করেছে। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের চিহ্নিত করে দেওয়া সেই হ্যান্ডেলগুলিকে বন্ধ করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র ভারতের গ্রাহকদেরই অ্যাকাউন্টে প্রভাব পড়েছে। কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরব বিদেশিদের হ্যান্ডেলকে বন্ধ করা হবে না বলে জানিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।
ব্লগ পোস্টে টুইটার কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, সাংবাদিক বা সংবাদমাধ্যমের কর্মী, সমাজকর্মী এবং রাজনীতিবিদদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করছে না তারা। বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করে ভারতীয় আইনের মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে বলে তারা জানিয়েছে। উল্লেখ্য, #FarmerGenocide হ্যাশট্যাগ দিয়ে ২৫৭টি অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট সরকার বিরোধী টুইট করা হয়েছে। তার মধ্যে ১২৬টি অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট বা নিষ্ক্রিয় করেছে টুইটার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক যে ১২০০টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে, তার মধ্যে ৫৮৩টি বন্ধ করা হয়েছে বলে টুইটার সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, কৃষক আন্দোলন নিয়ে সরকার বিরোধী, 'খলিস্তানপন্থী' এমন ১২০০ টুইটার হ্যান্ডেলকে বন্ধ করার জন্য টুইটার কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। সেই নোটিসের ২৪ ঘণ্টা বাদেই মঙ্গলবার পাল্টা কেন্দ্রকে টুইটার কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কাছে কর্মীদের নিরাপত্তাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ। সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, “সরকারের সঙ্গে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আমরা। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে প্রাথমিক আলাচনা হয়েছে। তবে কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টিই নিয়েই বেশি চিন্তিত আমরা।