Advertisment

২৬ জানুয়ারি ঠিক কী হয়েছিল? পুনর্নির্মাণে দীপ সিধুকে নিয়ে লালকেল্লায় দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ

এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত যুগরাজ সিং, গুরজত সিং এদের গ্রেফতারিতে ১ লক্ষ টাকা পুরষ্কারমুল্য ধার্য করা হয়েছে। সন্দেহ, এরা লালকেল্লায় কৃষক আন্দোলনের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন কিংবা হিংসায় মদত দিয়েছিলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রজাতন্ত্র দিবসের হিংসার পুনর্নির্মাণে ধৃত অভিনেতা দীপ সিধুকে লালকেল্লা নিয়ে গেল দিল্লি পুলিশ। সেই ঘটনার পর থেকে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ এই ঘটনার তদন্তে। এখনও পর্যন্ত দীপ সিধু ছাড়া ইকবাল সিং নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।এই দু’জনকে নিয়েই শনিবার লালকেল্লা গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, দীপ সিধু আর ইকবাল সিং লালকেল্লা হিংসার অন্যতম মুল চক্রী। সোমবার রাতে দিল্লি-হরিয়ানার কার্নাল বাইপাস থেকে অভিনেতা দীপ সিধুকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে, তাঁর সাত দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। সোমবার সেই মেয়াদ শেষের আগে এই ঘটনার তদন্তভার এগিয়ে নিয়ে যেতে এদিন দুই ধৃতকে লালকেল্লায় নিয়ে আসা হয়েছিল। এমনটাই ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ সুত্রে খবর।

Advertisment

জানা গিয়েছে, ঠিক কোন পথে নিরাপত্তা টপকে অভিযুক্তরা কৃষকদের নিয়ে লালকেল্লা ঢুকেছিল, কীভাবে ঐতিহাসিক এই সৌধের ওপরে ওঠে হিংসায় মদত দেওয়া হয়েছিল? এই প্রশ্নের জবাব এদিন খুজেছেন তদন্তকারীরা। সিধুর পাশাপাশি ইকবাল সিংহের গ্রেফতারিতে ৫০ হাজার টাকা পুরষ্কারমুল্য ধার্য করছিল পুলিশ। মঙ্গলবার হোশিয়ারপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সিধুকে। অন্যদিকে এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত যুগরাজ সিং, গুরজত সিং এদের গ্রেফতারিতে ১ লক্ষ টাকা পুরষ্কারমুল্য ধার্য করা হয়েছে। সন্দেহ, এরা লালকেল্লায় কৃষক আন্দোলনের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন কিংবা হিংসায় মদত দিয়েছিলেন।

এছাড়াও সন্দেহভাজন আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকার পুরষ্কারমুল্য ধার্য করা হয়েছে। এই তিন জন হলেন, বুটা সিং, সুখদেব সিং, জাজবীর সিং। এই সন্দেহভাজনদের মধ্যে দীপ সিধু আর ইকবাল সিংকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। এমনটাই সুত্রের খবর।

এদিকে, প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা অহিংস আন্দোলন হঠাৎ করেই হিংসাত্মক হয়ে উঠেছিল। ২৬ জানুয়ারির ঘটনায় দাগ লেগেছে কৃষক আন্দোলনের গায়ে। জঙ্গি সংগঠন খালিস্থানীরা প্রতিবাদী কৃষকদের মদত দিচ্ছি বলে অভিযোগ করে প্রশাসন। যা উড়িয়ে দিলেও সতর্ক কৃষক নেতারা। চরমপন্থীরা কেন্দ্র বিরোধী কৃষক আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করে যাতে সরকারের হাত শকত্ করতে না পারে তার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে দূরে থাকার আবেদন করেছেন পাঞ্জাবের চাষীরা। হোশিয়ারপুরের কৃষক লাখবীর সিং, যিনিপ্রতিদিন সিঙ্ঘু সীমানায় ধর্নায় থাকেন তাঁর বক্তব্য, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বা খালিস্থানীরা যদি সত্যিই কৃষকদের মঙ্গল চান তাহলে যেন তাঁরা নিজেদের আদর্শ অনুসারে এই আন্দোলন সম্পর্কে কোনও মন্তব্য না করেন। কৃষক আন্দোলনের কালো দিক বার করতে সরকার তৎপর। ওদের রূঢ় মন্তব্যের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনকে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

কৃষি আইন বিরোধী অন্য এক প্রতিবাদী চাষী রাজেন্দ্র সিং ঠাকুরের কথায়, ‘যদি কোনও গোষ্ঠীর সদস্য নিজেদের নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন করে থাকেন তবে তাঁদের দূরে থাকাই ভালো। এটাই কৃষকদের প্রতি তাঁদের সেরা সমর্থন বলে বিবেচিত হবে।’ ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ানের (উগরাহান) সম্পাদক সুখদেব সিং কোকরিকালান বলেছেন, ‘কৃষকদের আন্দোলনকে যেকেই গণতান্ত্রিক পথে সমর্থন করেত পারে। আনরা তার বিরোধী নই। কিন্তু, অবশ্যেই সেই সমর্থন কৃষকদের আন্দোলেনর উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনও গোষ্ঠীর উদ্দেশ্য এই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে চরিতার্থ করা যাবে না।’

সুখদেব সিং-য়ের মতে, ‘কৃষকদের ঐক্য দেখে অনেকেই এই আন্দোলনের মাধ্যেমে নিজেদের উদ্দেশ্য সাধণের চেষ্টা করছে। এটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। এর সঙ্গে কৃষকদের কোনও সম্পর্ক নেই। আদতে ওইসব গোষ্ঠীর লোকেরা সরকারেরই হাত শক্ত করতে উদ্যোগী।’ বিকেইউ (দোয়াবা)-এর সম্পাদক সৎনাম সিং সাহানির দাবি, ‘আন্দোলন ভাঙতে এগুলো সরকারের কৌশল হতে পারে। হতে পারে কোনও গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থেই কৃ।ক আন্দোলনকে সমর্থনের কথা বলছে। কিন্তু, কৃষকদের এতে কিছুই করার নেই। যদি এই ধরণের কেই বা কোনও গোষ্ঠী মনে করেন আমাদের সত্যিই সমর্থন করবেন, তবে তারা যেন সোশাল মিডিয়ায় আমাদের হয়ে কোনও কথা না বলে।’

কীর্তি কিষাণ ইউনিয়ানের নেতা কুলবিন্দর সিং বলেছেন, ‘সরকার যাই বলুক না কেন আমরা জানি এই আন্দোলন শুধু কৃষকদেরই। শুধু পাঞ্জাবের নয়, এটা গোটা দেশের কৃষকদের বিক্ষোভ কর্মসূচি। বিচ্ছিন্নবাদীদের মন্তব্য আন্দোলনকে কোনওভাবেই ধাক্কা দিতে পারবে না। সরকার যতই আমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিক তাতে কোনও লাভ হবে না।’

Deep Sidhu Delhi Police Red Fort
Advertisment