শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যা মামলায় চার্জশিট পেশ করল দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবার মোট ৬,৬২৯ পাতার চার্জশিট আদালতে পেশ করা হয়েছে। চার্জশিটে পুলিশ উল্লেখ করেছে, গত বছরের মে মাসে লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধাকে খুন করেছে আফতাব পুনাওয়ালা। হত্যার পর শ্রদ্ধার দেহ বহু টুকরো করে সে দেহাংশগুলো ফেলে এসেছিল কাছের জঙ্গলে। চার্জশিটে এই হত্যাকাণ্ডের কারণও উল্লেখ করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, পুরোনো এক বন্ধুর সঙ্গে শ্রদ্ধার দেখা হয়েছিল। তারপর, ১৮ মে আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে মারপিট হয়। সেই মারপিটের পরই শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব।
মঙ্গলবার এই ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক করেন দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সাউদার্ন রেঞ্জ) মিনু চৌধুরি। তিনি বলেন, 'শ্রদ্ধা তাঁর এক পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরেছিল। আফতাব এই ঘটনায় হতাশ হয়ে পড়ে। সে শ্রদ্ধার সঙ্গে মারামারি জুড়ে দেয়। এই সময়ই রাগের বশে শ্রদ্ধাকে খুন করে আফতাব।' চার্জশিটে মোট ১৫০ জন সাক্ষীর উল্লেখ করেছে দিল্লি পুলিশ। সেখানে বলা হয়েছে, শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল আফতাব। তারপর নিজের লিভ-ইন পার্টনারের দেহ সে ৩০ টুকরো করে। সেই দেহাংশগুলোই মেহরৌলির জঙ্গলে ফেলে দিয়ে এসেছিল আফতাব। চার্জশিটে আফতাবের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা (খুন), ২০১ ধারা (প্রমাণ নষ্ট)-র অভিযোগ দায়ের করেছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন- ফের ৫০ হাজার বছর পর পৃথিবীর কাছাকাছি সবুজ ধূমকেতু, কোনও অশনি সংকেত?
মিনু চৌধুরি জানিয়েছেন, এই মামলার তদন্তে পুলিশ ৯টি দল গঠন করেছিল। এমনকী, একটি বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য হিমাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, 'শ্রদ্ধার দেহাংশ উদ্ধারের জন্য গুরগাঁও এবং মহারাষ্ট্রেও তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা।' পাশাপাশি, এই মামলার তদন্তে ডিএনএ টেস্ট, নার্কো টেস্ট, ভয়েস অ্যানালাইসিস এবং মুখমণ্ডল পরীক্ষাও করা হয়েছে। চার্জশিটে মোবাইল, ল্যাপটপ, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ এবং ফোনের কল ডিটেলসেরও উল্লেখ করেছে পুলিশ। যুগ্ম কমিশনার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা অনেক কিছু উদ্ধার করেছি। আর, যাবতীয় পরীক্ষায় একই ফল পাওয়া গেছে।'
পুলিশ এই মামলায় শ্রদ্ধার বন্ধু ও সহকর্মীদের বিবৃতিও নথিবদ্ধ করেছে। ওই সব বিবৃতিতে শ্রদ্ধা ও আফতাবের 'তিতিবিরক্ত' সম্পর্কের উল্লেখ আছে। পাশাপাশি, ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা বন্ধুদের কাছে আফতাব তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ করেছিল। সেই সব কথাবার্তার স্ক্রিনশটও মামলার তদন্তে সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
Read full story in English