২০২০ সালের ডিসেম্বরে উত্তরপূর্ব দিল্লি হিংসায় অন্যতম অভিযুক্ত শাহরুখ পাঠান। দিল্লি পুলিশকে তার করে বন্দুক উঁচিয়েছিল সে। পরে গ্রেফতার করা হয় তাকে। অসুস্থ বাবাকে দেখার জন্য ধৃত শাহরুখ পাঠানের চার ঘন্টা প্যারোল মঞ্জুর করেছিল আদালত। শাহরুখকে স্বাগত জানাতে তার বাড়ির সামনে ভিড় উপচে পড়েছিল। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। সেখান থেকেই এই বিষয়টি জানা গিয়েছে।
দিল্লির এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, 'তৃতীয় ব্যাটালিয়নের পুলিশ কর্মীদের একটি দল শাহরুখকে কারাগার থেকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর শাহরুখকে ফের জেলবন্দি করা হয়।'
চলতি মাসের ২৩ মে অতিরিক্ত দায়রা জজ অমিতাভ রাওয়াত শাহরুখ পাঠানকে তার বাবার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিলেন। সেজন্য তার প্যারোলও মঞ্জুর হয়। আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই আদালত শাহরুখের প্যারোল মঞ্জুর করেছে। পাঠানকে তার বাবা, মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতের নির্দেশ ছিল, পাঠানের একাধিকবার জামিন অস্বীকার করা হয়েছিল কিন্তু তার বাবার অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করা হয়েছে। যেটা যাচাই করা হয়েছিল। রায়ে বিচারক বলেছিলেন যে, 'শাহরুখের বাবা, মা বয়স্ক এবং তাঁরা অসুস্থ… এই পরিস্থিতিতে আদালত মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে শাহরুখের আবেদন মঞ্জুর করছে।' আদালত বলেছিল যে প্যারোলটি শুধুমাত্র তার অসুস্থ বাবা, মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্যই, অন্য কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নয়।
পাঠানের আইনজীবীদের যুক্তি ছিল যে, এই বছরের মার্চ মাসে যখন শাহরুখ পাঠানের বাবার জিবি পান্ত হাসপাতালে করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাফি অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি ছিলেন তখন শাহরুখকে একদিনের জন্য প্যারোল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তিনি তার বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, কারণ সে সময় তাঁর অস্ত্রোপচার চলছিল।
দিল্লির এক আদালত পাঠানের বিরুদ্ধে ধারা আইপিসি-র ১৪৭ (দাঙ্গা), ১৪৮ (মারাত্মক অস্ত্র দিয়ে দাঙ্গা), ১৪৯ (বেআইনি সমাবেশ দ্বারা সংঘটিত অপরাধ), ১৮৬ (সরকারি কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া), ১৮৮ (আদেশ অমান্য) ধারায় চার্জ গঠন করেছিল। এছাড়াও ১৫৩এ (ধর্মের ভিত্তিতে শত্রুতা প্রচার করা, ইত্যাদি), ২৮৩ (জনসাধারণের পথে বিপদ বা বাধা), ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারীকে নিবৃত্ত করার জন্য আক্রমণ বা অপরাধমূলক বল), ৩৩২ (সরকারি কর্মচারীকে নিবৃত্ত করতে স্বেচ্ছায় আঘাত করা), ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ (স্বেচ্ছায় আঘাত করা), এবং ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) ধারাতেই মামলা রয়েছে।
Read in English