গত ৯ ডিসেম্বর দিল্লির রোহিণী আদালতের ১০২ নং কক্ষে মৃদু বিস্ফোরণ হয়। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। ধৃত ডিআরডিও-র বিজ্ঞানী বলে দাবি পুলিশের। জানা গিয়েছে, ধৃত ৪৯ বছরের বিজ্ঞানী তাঁর প্রতিবেশী এক আইনজীবীকে হত্যার চেষ্টায় আদালত কক্ষে টিফিন বাক্সের মধ্যে বিস্ফোরক রেখেছিলেন। বিজ্ঞানী হওয়ার সুবাদে যা তিনি নিজেই তৈরি করেছিলেন।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের এক অফিসার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন ধৃত বিজ্ঞানীর নাম ভারত ভূষণ কাটারিয়া। অফিসারের কথায়, 'ধৃতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের যুক্তিপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে, এছাড়া সিসিটিভিতে ওই দিন আদালতে তাঁর উপস্থিতিও নজরে এসেছে। এখন দেখার এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে সে একা, নাকি অন্যকেউ জড়িত।' তবে এই ঘটনার পিছনে সন্ত্রাসবাদী যোগ নেই বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
চলতি মাসের ৯ তারিখ সকাল ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ ১০২ নম্বর কক্ষে এজলাস চলাকালীন বিস্ফোরণ হয়। যার শব্দে আদালত চত্বরে আতঙ্ক ছড়ায়। আসে দমকল এবং পুলিশ। বন্ধ করে দেওয়া হয় আদালতের সব কক্ষের শুনানি। খালি করে দেওয়া হয় আদালত চত্বর। ওই দিন প্রাথমিক তদন্তের পর দিল্লি পুলিশ জানিয়েছিল যে, 'স্পেশাল সেলের বেশ কয়েকটি টিম ২৪ ঘন্টা কাজ করছে। নর্দার্ন রেঞ্জ ১০ ডিসেম্বর রোহিণী আদালতের ১০২ নম্বর কক্ষের সব মামলার তালিকা খতিয়ে দেখে সূত্র পেয়েছে। তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে এবং মামলার সঙ্গে যুক্তদের কোনও পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা তা দেখা হচ্ছে। পুলিশ সিসিটিভি ক্যামেরাও পরীক্ষা করা শুরু করেছে এবং একজন ব্যক্তির ফুটেজ দেখে তাকে সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে। সেদিন শুনানির জন্য যাঁদের আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল তাঁদের মধ্যে একজন, সিসিটিভিতে দেখা সন্দেহজনক ব্যক্তিকে তাঁর প্রতিবেশী হিসেবে শনাক্ত করেছেন এবং পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তিকে নিয়ে গিয়েছে।'
তদন্তের সময় পুলিশের নজরে পড়ে যে, বিজ্ঞানী ভারত ভূষণ কাটারিয়ার প্রতিবেশী তাঁর বিরুদ্ধে আঘাত করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছে। এবং শেষ শুনানিতে কাটারিয়াকে ১০০০ টাকা জরিমানা করেছে। আদালতের মূল্যবান সময় অপ্রয়োজনীয় কারণে ব্যয়ের কারণেই বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে এই জরিমানা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, কাটারিয়ার অশোক বিহারের সম্পত্তি রয়েছে, যার একটি তলায় প্রতিপক্ষ আইনজীবী থাকন। লিফট নির্মাণকে ঘিরে গত ৬ বছর ধরে এই বিবাদ চলছে। এক অফিসারের কথায়, 'চলতি মাসের ২০ তারিখ শেষ শুনানির দিন ধার্য হয়। সেদিনই কাটারিয়ার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হত।'
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, টিফিন বাক্সে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেড বিস্ফোরক হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ছিল শ্রাপনেল। কিন্তু, মিশ্রনটি সঠিক না হওয়ায় বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল না। প্রাণে বেঁচে যান আইনজীবী।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন