/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/11/delhi-pollution-3.jpg)
দিল্লির বাতাসে বিষ
দীপাবলি, ছটপুজো মিটতেই দিল্লিতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। বায়ুদূষণে প্রাণ ওষ্ঠাগত রাজধানীর। দমবন্ধ হয়ে আসছে সাধারণ মানুষের। গত পাঁচ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে দূষণ। এই পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের জন্য় স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি সরকার।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়ে দেন, এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে স্কুল। অফিস-কাছারিও বন্ধ থাকছে। বাড়ি থেকেই কাজ করতে হবে কর্মীদের। সেইসঙ্গে আগামী চারদিন বন্ধ থাকবে নির্মাণ শিল্পের কাজকর্ম।
কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, সরকারি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। তবে স্কুল বন্ধ থাকলেও পঠনপাঠন চালু থাকবে। অনলাইনে ক্লাস চলবে পড়ুয়াদের। এদিন দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ১৪ নভেম্বর থেকে ১৭ নভেম্বর আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, খড় পোড়ানোর জেরে ধোঁয়া থাকবে বাতাসে। বাতাসের গতিও কম থাকবে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই কয়েকদিন সমস্ত রকম নির্মাণ কাজকর্ম বন্ধ থাকবে দিল্লিতে। বেসরকারি সংস্থাগুলিকে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হোক।
এদিন, সুপ্রিম কোর্টের তরফে দিল্লি সরকারকে দূষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য লকডাউনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেটাকে মাথায় রেখে কেজরির বক্তব্য, "আদালত সম্পূর্ণ লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছে। আমরা লকডাউনের গুরুত্ব বুঝি। এটা কারও দিকে আঙুল তোলার সময় নয়। আমাদের লক্ষ্য হল দূষণের বাড়বাড়ন্তকে নিয়ন্ত্রণে আনা। শহরে একটা আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি করা।"
প্রসঙ্গত, দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে শনিবার শীর্ষ আদালতের তরফে কেন্দ্রকে বলা হয়েছে যে, ‘কীভাবে রাজধানীর বাতাসের গুণমান ৫০০-র বদলে ২০০ করা যায় তা জানানো হোক। আমরা কি ২ দিনের লকডাইনের মতো কিছু ভাবতে পারি। মানুষ বাঁচবে কীভাবে? দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মান অত্যন্ত খারাপ এবং আগামী ২-৩ দিনে তা আরও খারাপ হবে। দীর্ঘকালীন পদক্ষেপের কথা পরে ভাবা যাবে, আপাতত জরুরি ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ করা হোক।’
আরও পড়ুন ‘লকডাউনের মতো জরুরি পদক্ষেপ ভাবুন’, দিল্লির দূষণ রোধে দিল্লিকে সুপ্রিম নির্দেশ
প্রধান বিচারপতি দিল্লির অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমাদের বাড়ির ভিতরেও মাস্ক পরতে হচ্ছে।’ কেন্দ্রের পাশাপাশি এদিন শুনানিতে দিল্লি সরকারকেও কার্যত ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। কেজরিওয়াল সরকারের থেকে শীর্ষ আদালত জানতে চায়, তাদের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণকারী টাওয়ার ও প্রকল্প তৈরির বিষয়টি কোন পর্যায়ে? ‘রাজ্য সরকার সব স্কুল খুলে দিয়েছে। দূষণের মধ্যে দিয়েই পড়ুয়ারা যাতায়াত করছে। এটা তো কেন্দ্রের নয়, রাজ্যের আওতাধীন বিষয়। তাহলে এবার কী হল?’
দিল্লির বায়ুদূষণ কমাতে শীর্ষ আদালত সবপক্ষকে নিয়ে কেন্দ্রকে জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ নভেম্বর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন