/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/05/Thyagraj-Stadium-ias-officer-sanjeev-khirwar-dog.jpg)
ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে কুকুর নিয়ে ঘুরছেন আইএএস সঞ্জীব খিরওয়াড়। ছবি- অভিনব সাহা
অ্যান্ড্রু অ্যামসন
দিল্লির ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে সময়ের আগেই অনুশীলন গোটাতে বাধ্য হচ্ছেন খেলোয়াড়, কোচরা। গত কয়েকমাস ধরেই এই অভিযোগ করে আসছেন তাঁরা। আগে ৮ থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অনুশীলন করা গেলেও বর্তমানে ৭টার মধ্যেই স্টেডিয়াম ছাড়তে হচ্ছে বলে দাবি খেলোয়াড়দের। তাঁদের মতে, ওই সময়ের আধ ঘন্টার মধ্যেই দিল্লির প্রন্সিপাল (রাজস্ব) সেক্রেটরি সঞ্জীব খিরওয়াড় তাঁর প্রিয় পোষ্যটিকে নিয়ে স্টেডিয়ামে পাইচারি শুরু করেন। তার জেরেই ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে নাকি সময়ের আগেই অনুশীলন শে, করতে হচ্ছে খেলোয়াড় ও কোচদের।
ওঅ স্টেডিয়ামের এক কোচের কথায়, 'প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে অনুশীলন গোটানোর ফলে প্রতিযোগিতায় তার প্রভাব পড়তে পারে। সরকারি অফইসার কুকুর দিয়ে স্টেডিয়ামে ঘোরার জন্যই এই হাল হয়েছে।'
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, দিল্লির রাজস্ব দফতরের সেই প্রন্সিপাল সেক্রেটরি সঞ্জীব খিরওয়াড় পুরোটাই 'মিথ্যা' বলে দাবি করেছেন। যদিও স্বীকার করেছেন যে, তিনি তাঁর পোষ্যকে নিয়ে 'মাঝেমধ্যে' স্টেডিয়ামে যান। তবে সেই জন্য খেলোয়াড়দের অসুবিধার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন খিরওয়াড়।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধি গত এক সপ্তাহে তিনবার বিকেলবেলায় ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন। দেখা যায় যে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রক্ষীরাস্টেডিয়ামের ট্র্যাকে পাশে হাঁটাহাটি করছেন, বাঁশি বাজাচ্ছেন এবং বলছেন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ওই এলাকাটা ফাঁকা করে দিতে হবে।
২০১০ সালের কমনওয়েলথ গেমসের সময় ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামটি দিল্লিতে তৈরি হয়েছিল। নানা সুবিধায় পূর্ণ এই ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি। ফলে জাতীয় এবং রাজ্যস্তরের ক্রীড়াবিদ এবং ফুটবলারদের খুব আকর্ষণের স্টেডিয়াম এটি।
আগে যেখানে ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে রাত ৮ থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অনুশীলন করতে দেওয়া হত তখ হঠাৎ গত কয়েকমাস ধরে অন্য ছবি কেন দেখা যাচ্ছে? কেন স্টেডিয়াম থেকে সন্ধ্য়া ৭টার মধ্যে খেলোয়াড় ও কোচদের বেরিয়ে যেতে বলা হচ্ছে? জবাবে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামের পরিচালক অজিত চৌধুরী বলেছেন, 'অনুশীলনের সরকারি সময় বিকেল ৪ থেকে ৬টা। কিন্তু প্রচণ্ড গরমের কথা বিবেচনা করে তা সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।' যদিও অনুশীলনের সময়সীমা সংক্রান্ত কোনও সরকারি নির্দেশ অজিত চৌধুরী দেখাতে পারেননি। এছাড়া খেলোয়াড়দের অভিযোগও তিনি মেনে নেননি। জানিয়েছেন যে, অনুশীলনের পর ওই স্টেডিয়ামে কোনও আইএএস অফিসার পোষ্ঠকে নিয়ে ঘোরেন কিনা তা তাঁর জানা নেই।
অজিত চৌধুরী বলেছেন, 'আমাদের সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে স্টেডিয়াম বন্ধ করতে হবে। যে কোনও জায়গায় সরকারি অফিস বন্ধের সময় এটাই। এই স্টেডিয়াম দিল্লি সরকারের অধীনে একটি সরকারি অফিস। একজন আইএএস তাঁর কুকুরকে নিয়ে স্টেডিয়ামে হাঁটেন কিনা সেটা আমার জানা নেই। আমি সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে স্টেডিয়াম ত্যাছেড়ে বেরিয়ে যাই।'
মঙ্গলবার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধির নজরে পড়েছে যে, আইএএস সঞ্জীব খিরওয়াড় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ত্যাগরাজ স্টেডিয়ামে তাঁর পোষ্ঠকে নিয়ে প্রবেশ করছেন। তারপর অনুশীলনের ট্র্যাকে কুকুরটি ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফুটবল মাঠেও পোষ্যটি অবলীলায় খেলছে। সবটাই ঘটছে নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখের সামনে।
আইএএস খিরওয়াড় বলেছেন, 'আমি কখনই কোনও খেলোয়াড়কে তাঁদের স্টেডিয়াম ছেড়ে যেতে বলব না। এমনকি আমি সেখানে গেলেও স্টেডিয়াম বন্ধ হওয়ার পরেই যাই…আমরা পোষ্যটিকে ট্র্যাকে ছেড়ে দিই না…যখন আশেপাশে কেউ না থাকে তখন আমরা তাকে ছেড়েদি। কিন্তু তা কখনও কোনও খোলয়াড়কে সরিয়ে নয়। এরপরও আপত্তিকর কিছু হলে আমি তা বন্ধ করে দেব।'
News reports have brought to our notice that certain sports facilities are being closed early causing inconvenience to sportsmen who wish to play till late nite. CM @ArvindKejriwal has directed that all Delhi Govt sports facilities to stay open for sportsmen till 10pm pic.twitter.com/LG7ucovFbZ
— Manish Sisodia (@msisodia) May 26, 2022
একজন প্রশিক্ষনাধীন অ্যাথলিটের মা, বাবা পরিস্থিতিটিকে 'অগ্রহণযোগ্য' হিসাবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন যে, 'আমার সন্তানের অনুশীলন ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি সরকারি অফিসার গভীর রাতেও কী রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই স্টেডিয়াম কুকুরকে হাঁটানোর জন্যও ব্যবহার করতে পারেন? এটা ক্ষমতার চরম অপব্যবহার।'