Advertisment

দিল্লি হিংসা: মর্গ আর থানার মাঝেই না পাওয়া আত্মীয়দের খোঁজ চলছে রাজধানীতে

মর্গে দেহ নিতে এসে ভাই শাহরুখ বলেন, "তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখেছিল পুলিশ। তাহলে তখনই কেন তাঁরা বাঁচাল না। দেওয়া হয়নি ডিএনএ রিপোর্টও"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Delhi violence

বুক ফাটা যন্ত্রণা নিয়েই 'বডি'র কাগজপত্র মিলিয়ে দেখছেন কেউ, কেউ আবার অপেক্ষা করছে ডিএনএ টেস্টের।

কেউ ইলেক্ট্রিকের কাজ করতেন, কেউ জেনারেটর বিক্রেতা, কেউ দুই সন্তানের মা, দিল্লি হিংসায় জড়িয়ে তাঁরা সকলেই, কিন্তু আজও বাড়ি ফেরেনি এদের কেউই। দিল্লি হিংসায় বলি হয়েছে বহু দেহ। গত দু'সপ্তাহ ধরে মর্গের সামনে একটাই দৃশ্য অসনাক্ত লাশকে সনাক্ত করছে তাঁদের পরিবার। বুক ফাটা যন্ত্রণা নিয়েই 'বডি'র কাগজপত্র মিলিয়ে দেখছেন কেউ, কেউ আবার অপেক্ষা করছে ডিএনএ টেস্টের।

Advertisment

পুলিশের বয়ান অনুযায়ী চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৫ জনের নিখোঁজের রিপোর্ট জমা পড়েছে। যদিও সব নিখোঁজের সঙ্গে এই দাঙ্গার কোনও সম্পর্ক নেই, এমনটাই মত পুলিশের। যদিও গত দু'দিনে সবচেয়ে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়েই জীবন কাটিয়েছে পরিবারগুলি। ২৪ ফেব্রুয়ারি কারওয়াল নগর থেকে নিখোঁজ হয়েছিল ফিরোজ (২৫)। দেওয়ালে দেওয়ালে 'সন্ধান চাই' এর পোস্টারও দিয়েছিল পরিবার। রবিবার পরিবার পেল ফিরোজের নিথর দেহ।

আরও পড়ুন: দিল্লি হিংসায় নজিরবিহীন দৃশ্য! মসজিদ পাহারা দিলেন হিন্দুরা, মন্দির আগলে মুসলিমরা

মর্গের দৃশ্য ভিজিয়ে দেয় চোখের পাতা। ১৮ বছরের ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছেন তা বাবা মহম্মদ হারুন। লাশঘরে দেখা হয়ে গিয়েছে ২৫টি দেহ। হঠাৎই খুঁজে পেলেন ছেলেকে। বেঁচে আছে ছেলে! হারুন বলেন, "শারীরিকভাবে তেমন কিছু হয়নি। কিন্তু মানসিকভাবে সুস্থ নয়। আমরা এখনও বুঝতে পারছি না সেদিন কীভাবে হারিয়ে গেল ও"। দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শাহরুখ। জেনারেটর ভাড়া দিয়ে পেট চালাতেন তাঁর দাদা মহসিন। মর্গে দেহ নিতে এসে ভাই শাহরুখ বলেন, "তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখেছিল পুলিশ। তাহলে তখনই কেন তাঁরা বাঁচাল না। সোমবার ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখনও দেওয়া হয়নি"।

আরও পড়ুন: আমি দায়িত্বে থাকলে বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করতাম, বিস্ফোরক দিল্লির প্রাক্তন পুলিশ প্রধান

খুঁজে পাওয়া যায়নি দুই সন্তানের বাবা মুর্সালিনকে (৩৩)। ২৫ ফেব্রুয়ারি স্ত্রী নার্গিসের সঙ্গে শেষবার কথা বলেছিলেন তিনি। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ নেই। ভাই হাফিজুদ্দিন বলেন, "সেই তখন থেকেই ওর ফোন বন্ধ। আমরা সব হাসপাতালের মর্গ ঘুরে দেখে নিয়েছি। পুলিশ বলছে তাঁরা তাঁদের লকআপে খুঁজছে। আমরা জানি না আর কোথায় কোথায় খুঁজব ওঁকে"।

এদিকে শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে যে কেন্দ্রীয় ও দিল্লি সরকারসমূহের অধীনে সমস্ত হাসপাতালকে ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফ করার এবং তা ১১ মার্চ পর্যন্ত সেগুলিকে সংরক্ষণেরও নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং বিচারপতি আই এস মেহতার একটি বেঞ্চ হাসপাতালগুলিকে সমস্ত সংস্থা থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেয়।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

delhi Violence
Advertisment