Advertisment

পুলিশি সক্রিয়তার মাঝেও জারি হিংসা, দিল্লিতে বেদম প্রহারে নিহত বৃদ্ধ

হিংসা বিধ্বস্ত রাজধানী। উত্তর পূর্ব দিল্লির ঘরে ঘরে এখন শুধুই আতঙ্ক ও সন্দেহের বাতাবরণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চেষ্টা করছে। কিন্তু কবে ঘুচবে অন্তরের কালিমা?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দিল্লিতে মর্গের সামনে স্বজনহারাদের ভিড়।

অশান্ত দিল্লিতে এখন পুলিশি সক্রিয়তা। খাঁকি উর্দিধারীদের টহল, রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি নিরাপত্তা, জায়গায় জায়গায় শান্তি কমিটির সঙ্গে পুলিশের বৈঠক চলছে। তাতে হিংসার রেশ কমেছে বটে, কিন্তু তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এতসবের মধ্যেও হিংসার বলি ৬০ বছরের আয়ুব আনসারি। পেশার কাগজ কুড়ানি আয়ুব ভোর চারটেতে কাজে বেড়িয়েছিলেন। মাঝপথেই হিংসার শিকার হন। রক্তাক্ত অস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাবাকে হারিয়ে আয়ুবের বছর আঠারোর ছেলের এখন সম্বল শুধুই চোখের জল।

Advertisment

বৃহস্পতিবার দিল্লি হিংসায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৭। শুক্রবার তা বেড়ে হয়েছে ৪২। স্বাধীন ভারতে আয়ুবের মতই হতভাগ্য মোবারক হুসেন, দিলবার নেগি, মণীশ, বাবু সালমানি এবং ফাইজান। পুলিশের দাবি, উত্তর পূর্ব দিল্লিতে হিংসার জেরে ১২৩ এফআইআর হয়েছে, আটক ৬৩০। পুলিশ ৪৭ শান্তি রক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছে। কিন্তু শুক্রবার নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রশ্ন একটাই- সত্যি কী হিংসা ঠেকানো সম্ভব?

ঠিক কী ঘটেছিল শুক্রবার ভোরে?
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলেছেন দিল্লি হিংসায় নিহত আয়ুবের ১৮ বছরের ছেলে সালমান আনসারি। কবরের বাইরে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেনে, 'অশান্তির জেরে গত কয়েকদিন আর বাবা কাজ করতে বেরোয়নি। কিন্তু বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। তাই শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ বাবা কাগজ কুড়াতে বেরিয়েছিল। আমি তখন ঘুমোচ্ছিলাম। ভোর ৬টা নাগাদ বাইরের চেঁচামিচিতে আমার ঘুম ভাঙে। দেখি রক্তাক্ত অবস্থায় কয়েকজন অপরিচিত বাবাকে নিয়ে এসেছেন। বাবার শরীর থেকে রক্ত ঝড়ছে।'

আরও পড়ুন: সিএএ নিয়ে অপপ্রচার করে হিংসা ছড়াচ্ছে বিরোধীরাই: শাহ

এরপরই বৃদ্ধ আয়ুবকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি করেন সালমান। বলেন, 'ওই আবস্থাতেই কোনও গাড়ি না পেয়ে আমাদের ঠেলায় করেই বাবাকে ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু, তা যথেষ্ট ছিল না। ক্লিনিকে ভর্তির জন্য পাঁচ হাজার টাকা চেয়েছিল কর্তৃপক্ষ। যা আমার কাছে ছিল না। এরপর জিটিবি হাসপাতালে নিয়ে যাই বাবাকে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পথেই বাবার মৃত্যু হয়।'

এরই ফাঁকে ছেলের সঙ্গে শেষ কথাও বলতে পেরেছিলেন আয়ুব। তখনই তুলে ধরেছিলেন মানবতার করুণ কাহিনী। জখম আবস্থাতেই ছেলে সালমান আনসারিকে আয়ুব জানিয়েছিলেন যে, শিব বিহারের কাছে বেশ কয়েকজন তাঁর পথ আটকায়। তারপরই নাম জিজ্ঞাসা করেছিল। এরপরই চলে বেদম প্রহার। যার পরিণতি দিল্লি হিংসায় আরেকটা লাশের সংখ্য়া বৃদ্ধি।

হিংসা বিধ্বস্ত রাজধানী। উত্তর পূর্ব দিল্লির ঘরে ঘরে এখন শুধুই আতঙ্ক ও সন্দেহের বাতাবরণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ চেষ্টা করছে। বদল হয়েছে কমিশনার। কিন্তু আদৌ কী ঘুচবে অন্তরের কালিমা। নাকি স্বাধীনতার সাত দশক পরেও আয়ুব, মণীশদের মত হিংসার শিকার হতে হবে আরও অনেককে? প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Violence delhi
Advertisment