লাদাখ সীমান্তে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে দু’দেশের সেনা। বাড়ছে উত্তেজনা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই দেশই সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে, বাড়ছে সমরাস্ত্র মজুতদারিও। তার মধ্যেই শুক্রবার ভারত-চিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে মস্কোয়। যদিও সীমান্ত উত্তেজনার জন্য নয়াদিল্লি-বেজিং একে অপরকেই দায়ী করেছে। জট না কাটলেও নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও স্থিতাবস্থা পুনরুদ্ধারের সোপান বলেই এই বৈঠককে মনে করা হচ্ছ। এই পরিস্থিতিতে চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংঘে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণে বেজিংকে কতটা প্রভাবিত করতে পারেন সেদিকেই নজর নয়া দিল্লির। আপাতত চিনের পরবর্তী পদক্ষেপ দেখেই এগোতে আগ্রহী ভারত। এর মধ্যেই মস্কোর উদ্যোগে আগামী ৯-১৩ সেপ্টেম্বর দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই-এর মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা দৃঢ় হচ্ছে।
Advertisment
জুনে ভারত ও চিনা সেনাদের মধ্যে লাদাখ সংঘর্ষের পর সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমণে দুই দেশের সেনা ও কূটনীতিক স্তরে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। পরে দু'তরফের বিশেষ প্রতিনিঝধি পর্যায়ের বৈঠকে জট সাময়িক কাটলেও গোগরা, হট স্প্রিং, প্যাংগং, দেবসাং থেকে সেনা সরাতে রাাজি নয় লালফৌজ।
২৯-৩০ তারিখ নতুন করে চিনা আগ্রাসনের পর ভারতীয় সেনা গত শনিবার প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে একাধিক পাহাড়ের চূড়ো দখল করেছে। এরপর সীমান্তে চিনা সেনার সমরাস্ত্র মজুতদারি বেড়েছে। লালফৌজের যাতায়াতও বেড়েছে। তবে ভারতের পদক্ষেপেই কিছুটা নত হয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনীথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আর্জি জানান সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
নয়াদিল্লির উচ্চ সরকারি আধিকারিকদের মতে, ভারত এখন দর কষাকষির পর্যায়ে রয়েছে। তাই বেজিংয়ের উচ্চ কর্তাদের উপর ফেংঘের প্রভাব ও চিনা পরবর্তী পদক্ষেপ মেপেই এগোতে চাইছে ভারত। তবে, সরকারের উপর প্রভাব খাটাতে এ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের মত শক্তিধর চিনা প্রতিরক্ষা ফেংঘে নন। তাই বৈঠকের ফলাফল ভাবাচ্ছে নয়াদিল্লিকে।
ভারতীয় কূটনীতিকদের মতে তাইওয়ান সমস্যা এবং চিনা আগ্রাসন নিয়ে আমেরিকা-জাপান-অস্ট্রেলিয়া-ভারত ও ইউরোপের নানা দেশের সমমনস্কতাও এ দেশের জমিতে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ ও বলপ্রয়োগকে কিছুয়া প্রতিহত করতে পারে।
আগামী ৯-১১ সেপ্টেম্বর সাংহাই কর্পোরেশন সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে। মস্কোর উদ্যোগে ভারত-চিন সমস্যা মেটাতে রাজনাথ-ফেংঘের মত এস জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই-এর মধ্যে বৈঠকের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে। এই বৈঠক হলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সমস্যার মেঘ কাটতে পারে বলেই আশা।