করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আরও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করতে চলেছে দিল্লি সরকার। কিন্তু পূর্ণ লকডাউনে ফিরবেন না কেজরিওয়াল সরকার। শনিবার অবস্থান স্পষ্ট করে জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘গত নভেম্বরে করোনার তৃতীয় ওয়েভের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে রাজ্য। সেই সময় দিনপিছু সংক্রমিত ছিল প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। সেই সংক্রমণ প্রতিরোধে যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দিল্লির সরকারি হাসপাতালে বন্দোবস্ত কড়া হয়েছিল, এবারও সেই ব্যবস্থার আয়োজন করা হচ্ছে। লকডাউন বিকল্প নয়। দিল্লির মানুষকে সুরক্ষিত করতে আমরা আরও কড়া করোনা বিধি লাগুর পথে হাঁটব।
এদিকে, এদিন কংগ্রেসি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন সনিয়া গান্ধী। করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এই বৈঠক। তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের আরও বেশি করে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। টিকাকরণ কর্মসূচিতে জোর দিতেও কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের আবেদন করেন তিনি।
কেন্দ্রের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘আগে ভারতীয়দের টিকাকরণ সুনিশ্চিত করে তবে রফতানিতে জোর দেওয়া হোক। আমাদেরও উচিত সচেতন নাগরিক হিসেবে করোনা বিধি মেনে চলা।‘
অপরদিকে, যত দিন এগোচ্ছে, ততই করোনা যেন গ্রাস করছে দেশকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণের গ্রাফ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭৯৪ জনের। যা রেকর্ড তৈরি করেছে দেশে।
করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষের গন্ডি পেরিয়েছে। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে এত আক্রান্ত হয়নি যত আক্রান্ত হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা হানায়। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৫ হাজার ৯২৬ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ কোটি ১৯ লক্ষ ৯০ হাজার ৮৫৯ জন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার অনেকটাই কম।
দেশে এখন অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১০ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৩১। এখনও পর্যন্ত দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪৩৬ জনের। সবচেয়ে চিন্তার পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে । গত ১৫ দিনে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ রীতিমতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এদিকে, শনিবারই রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের করোনা আক্রান্তের খবর জানা গিয়েছে।
কলকাতাও চিন্তা বৃদ্ধি করেছে। নির্বাচনী রাজ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরে এক লাফে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯৮৭ হয়েছে। সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যে।