বুধবার রাতে বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হল বিহারের বক্সার জেলা। রাত ৯টা ৩৫ নাগাদ দানাপুর ডিভিশনের রঘুনাথপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়েছে দিল্লির আনন্দ বিহার থেকে অসমের কামাখ্যাগামী ১২৫০৬ নর্থ-ইস্ট সুপারফাস্ট ট্রেন। ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এমনকী, কামরা পাশের চাষের জমিতে গিয়েও পড়েছে বলেই বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই দানাপুরের ডিআরএম ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। চলছে উদ্ধারকাজ।
জানা গিয়েছে দুর্ঘটনার জেরে দিল্লির আনন্দ বিহার থেকে অসমের কামাখ্যাগামী ১২৫০৬ নর্থ-ইস্ট সুপারফাস্ট ট্রেনের সমস্ত বগি এবং ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। আহতদের পাটনা, আরাহ এবং বক্সার হাসপাতালে রেফার ভর্তি করা হয়েছে। ৩৩ জন যাত্রীর বেশিরভাগই হাড়ে অথবা মাথায় চোট পেয়েছেন।
বক্সার স্টেশন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে রঘুনাথপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পৌঁছানোর পরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়, বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। যার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। মৃত চার যাত্রীর মধ্যে দিল্লির এক মহিলা এবং তার এক যমজ কন্যা রয়েছেন। তৃতীয় ব্যক্তি কিষাণগঞ্জের, চতুর্থ যাত্রীর পরিচয় এখনও জানা যায় নি। রেল সূত্রে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে বুধবার রাত ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি যখন ১২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে চলছিল তখন চালক ইমারজেন্সি ব্রেক কষেন তার জেরেই লাইনচ্যুত হয় ট্রেন।
রঘুনাথপুর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে আরাহ স্টেশনে ট্রেনটি থামার কথা ছিল। ট্রেনের সমস্ত বগি এবং ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয় এবং তিনটি এসি বগি লাইনের এক পাশে ঘুরে যায়। ৩৩ জনকে ভোজপুর, বক্সার এবং পাটনার সরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রঘুনাথপুর কমিউনিটি হেলথ সেন্টার থেকে আরও ৩৮ জন যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রেলওয়ের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকার্য্য শেষ করে।
রঘুনাথপুরের বাসিন্দা বিকাশ কুমার সিং বলেছেন "প্রতিবেশী গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ লোক মইয়ের সাহায্যে করে যাত্রীদের কাঁচের জানালা কেটে বাইরে বের করে আনেন।" আহত যাত্রীদের মধ্যে একজন প্রদীপ কুমার বলেন, “দুর্ঘটনার সময় আমি নিচের বার্থে ঘুমাচ্ছিলাম। আমি হরিয়ানার হিসার থেকে এসেছি এবং পরীক্ষার জন্য গুয়াহাটিতে যাচ্ছিলাম।”
বুধবার রাতের এই ট্রেন দুর্ঘটনা ওড়িশার বালাসোরে একসঙ্গে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় চার মাস পরে ঘটল। ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯৬ জন মারা যান। বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই সময় চেন্নাইগামী করোমণ্ডল এক্সপ্রেস একটি দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের পিছনে ধাক্কা মেরেছিল এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি তাতে লাইনচ্যুত হয়। এর কয়েক মিনিট পরেই হাওড়া যাওয়ার পথে যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ওই লাইনচ্যুত বগিতে ধাক্কা খেয়ে লাইনচ্যুত হয়েছিল।