দিওয়ালি পর ‘বাতাসের স্বাস্থ্যে’র আরও অবনতি! চরম অস্বস্তিতে দিল্লি, সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের। রাজধানী শহর দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্র আকাশছোঁয়া। কিছুতেই বাতাসের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে না। দিওয়ালির পরের দিন দিল্লির বায়ু দূষণ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
দিওয়ালির পর দূষণের মাত্রা আকাশছোঁয়া। সকালে কুয়াশায় ঢেকে যায় মহানগরীর অনেক এলাকা। বাজি ব্যবহারের কারণেই বায়ু দূষণের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে মত বিশেষজ্ঞদের। নয়ডা ও গুরুগ্রামেও একই অবস্থা। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বাজির লাগামছাড়া ব্যবহার নজরে এসেছে। ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে, আগামী কয়েকদিন দিল্লি-র আকাশ কুয়াশার চাদরে মোড়া থাকবে বলেই মিলেছে সংকেত। রাজধানীর বাতাসে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে বলে আগে আশঙ্কা করা হয়েছিল। এবার সেই আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণিত হল। গুরুগ্রামে আজ সকাল ৫ টায় AQI রেকর্ড করা হয় ২৪৫।
দূষণের কারণে বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু ও কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অসুবিধায় পড়তে হয়। অনেকেরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এর পাশাপাশি বায়ু দূষণের কারণে অন্যান্য রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন। দক্ষিণ দিল্লির একাধিক এলাকায় সন্ধ্যা থেকেই আতশবাজির তাণ্ডব । সেখানকার এক ব্যক্তি বলেন, “ শিক্ষিত মানুষ, হয়েও তারা এই কাজ করছে। এ থেকে শিশুরা কী শিখবে?" পূর্ব ও উত্তর পূর্ব দিল্লির লক্ষ্মী নগর, ময়ুর বিহার, শাহদারা, যমুনা বিহার সহ অনেক এলাকায় একই অবস্থা লক্ষ্য করা গিয়েছে। ওই সব এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আতশবাজির শব্দ কম হলেও রাত ৯টার পর থেকে বাজির দাপট মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে।
প্রতি বছর শীতে দিল্লিতে বায়ুদূষণের মাত্রা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়ায়। দূষণের কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় দেশের রাজধানী শহর। দিওয়ালিতে বাজি পোড়ানোর পর সেই দূষণ তুঙ্গে ওঠে। এবার কিন্তু দিওয়ালির আগে থেকেই দিল্লির বায়ু মান একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। দিওয়ালি যত কাছে আসছে দিল্লির বায়ুদূষণ তত বাড়ছে। এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সের (AQI) রিডিং অনুযায়ী রাজধানীর একাধিক এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক পর্যায়ে রয়েছে। AQI দিল্লিতে ৩২৩ এবং নয়ডায় ৩৪২-এ দাঁড়িয়েছে। দিল্লির কিছু এলাকায় তা ৪০০ ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন : < বাংলাদেশে তাণ্ডব সিত্রাংয়ের, ব্যাপক ঝড়বৃষ্টিতে মৃত বহু, বাংলায় আবহাওয়ার উন্নতি >
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক বোর্ডের তথ্য অনুসারে বায়ুদূষণের পরিমাণকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত রিডিং হলে সেটি ভালো। ৫১-১০০ পর্যন্ত সন্তোষজনক। ১০১-২০০ রিডিং উঠলে সেই অঞ্চল মাঝারি মাপের বলে ধার্য হবে। ২০১-৩০০ হলে তাকে উদ্বেগজনক বলে চিহ্নিত করা হবে। ৩০১ থেকে ৪০০ খুবই গুরুতর এবং ৪০১-৫০০ রিডিং হলে সেটা বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হবে।
CREA বলেছে যে ৫ থেকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে বৃষ্টির কারণে দিল্লিবাসীরা বায়ু দূষণ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। এরপর থেকে শহরের বাতাস দ্রুত খারাপ হতে থাকে এবং শীত আসার আগেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে। দিওয়ালির আগে থেকেই দিল্লির বাতাসের ‘স্বাস্থ্য সংকট’ আরও প্রকোট আকার ধারণ করেছে। আর দিওয়ালির রাতে বাজির দাপটে পরের দিন দিল্লির বাতাসের গুণমান আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে।