মৌলিক সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত, মহিলা বন্দিরা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি দুর্দশার সম্মুখীন। শুধুমাত্র গোয়া, দিল্লি এবং পুদুচেরির জেলগুলিতেইই মহিলা বন্দীরা কোনও বাঁধা ছাড়াই তাদের সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। দেশের মাত্র ৪০% এরও কম কারাগারে মহিলা বন্দীদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ করা হয়। অধিকন্তু, কারাগারের ৭৫% মহিলা ওয়ার্ডকে পুরুষ ওয়ার্ডের সঙ্গেই রান্নাঘর এবং সাধারণ সুবিধাগুলি ভাগ করে নিতে হয়। কারাগারের সংস্কার নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্ট-নিযুক্ত কমিটির রিপোর্ট চমকে দেওয়ার মতোই।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, “কারাবাসকালীন সময়ে মহিলারা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি মানসিক যন্ত্রণায় ভোগেন। বিশেষ করে চিকিৎসা পরিষেবা আইনি সহায়তা এবং পরামর্শ, বিনোদনমূলক সুবিধার মতো মৌলিক সুযোগ-সুবিধার অ্যাক্সেসের ক্ষেত্রে”। ২০১৪ এবং ২০১৯ এর মধ্যে, ভারতীয় কারাগারে মহিলা বন্দীদের সংখ্যা ১১.৭ % বৃদ্ধি পেয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে মাত্র ১৫টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কার্যকরী মহিলা কারাগার রয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত শ্রেণীর মহিলা বন্দীদের একই ওয়ার্ড এবং ব্যারাকে রাখা হয়, তারা বিচারাধীন বা দোষী যাই হোক না কেন।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ম্যাট্রনদের কীভাবে মহিলাদের অনুসন্ধান করতে হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এটি আরও বলে যে মহিলা বন্দিরা শুধুমাত্র ১০ টি রাজ্য এবং ১টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যে কোনও ধরণের অপব্যবহার বা হয়রানির জন্য জেল কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। মহিলা বন্দীদের জন্য আলাদা মেডিকেল এবং মানসিক ওয়ার্ডের অভাব, সন্তান প্রসবের জন্য "প্রাথমিক ন্যূনতম সুবিধা"র অভাবের কথাও রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে।
এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য, টেলিমেডিসিন সুবিধা চালু করার সুপারিশ করা হয়েছে, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার মত কিছু বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০১৮-এ, শীর্ষ আদালত, সারা ভারত জুড়ে কারাগারে সামগ্রিক অবস্থার বিষয়ে শুনানি করার সময়, জেল সংস্কার সম্পর্কিত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার জন্য এবং বিভিন্ন দিকে সুপারিশ করার জন্য প্রাক্তন বিচারপতি রায়ের নেতৃত্বে একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে।