বিতর্কিত মন্তব্য করে বরাবর শিরোনামে থেকেছেন। লোকসভা নির্বাচনের পরপরই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফের শিরোনামে আসেন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। বীরভূমের তথা রাজ্য রাজনীতিতে বড় চমক ছিল সেই দলবদল। এবার বিধানসভা নির্বাচনে আরও বড় চমক দিলেন মনিরুল। বিজেপির টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিলেন লাভপুরের বিদায়ী বিধায়ক।
কিন্তু তাঁকে দলে নেওয়ার পর থেকে ঘরে-বাইরে কোন্দলে জর্জরিত হয় বিজেপি। গলার কাঁটার মতো মনিরুল তখন বিজেপির কাছে। ধীরে ধীরে খবর থেকে হারিয়ে যান মনিরুল। গেরুয়া শিবিরে তাঁকে নিয়ে উচ্চবাচ্য হত না। তিনি দলে আছেন না নেই তা নিয়েও মুখে কুলুপ এঁটেছিল পদ্ম শিবির। বিধানসভা ভোটে টিকিটের আশায় ছিলেন মনিরুল। তবে তিনি যে টিকিট পাচ্ছেন না তা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। এদিকে তৃণমূলে ফেরার রাস্তাও তাঁর বন্ধ কার্যত। তাই নির্দল হিসাবেই ভোটে দাঁড়ালেন মনিরুল।
বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশের পরে মনিরুল দাবি করেন, ভোটে তিনিই জিতবেন। তিনি বলেন, ‘‘লাভপুরে ব্যক্তি মনিরুল ইসলামের নামে ভোট হবে। আর যারা দু’নম্বরে, তিন নম্বরে থাকবে তারা ভাববে।’’ ২০১১ সাল থেকে টানা দুবার লাভপুরে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন মনিরুল। কিন্তু বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিবাদ সর্বজনবিদিত। সেই কারণেই ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের পর দলবদল করেন। কিন্তু জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিক্ষোভের জেরে সবরকম দলীয় কর্মসূচি থেকে তাঁকে দূরেই রাখা হত।
একদা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা তৃণমূলে যোগ দেন, তারপরই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন। আগে মমতার প্রিয় কেষ্টদার সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও পরে তা আদায় কাঁচকলা হয়ে যায়। দলবদলেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। হিন্দুত্ববাদী দলে ব্রাত্যই থেকে গিয়েছেন মুসলিম নেতা মনিরুল। এবার টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসাবেই দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি। তবে জেলা তৃণমূলের দাবি, বিজেপির সমর্থনেই নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন মনিরুল। লাভপুরে মুসলিম ভোট কাটার জন্য তাঁকে ব্যবহার করছে বিজেপি।