উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া শেল্টার হোম কাণ্ডের জেরে দেওরিয়ার পুলিশ সুপারকে অপসারণ করার নির্দেশ দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, "দেওরিয়ার এস পি রোহন (পি কানায়)-কে তাঁর পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি ছাডা়ও, সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত দেওরিয়াক এসপি পদে যিনি ছিলেন, এখন যিনি বস্তির ডিআইজি, সেই রাকেশ শংকরকেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।"
গত ৬ অগাস্ট দেওরিয়ায় বেআইনি ভাবে চলা মেয়েদের একটি শেল্টার হোমে যৌন নিগ্রহের ঘটনা সামনে আসার পর, সেখান থেকে ২৪ জন মেয়েকে উদ্ধার করা হয়।
সরকারের ওই মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, দেওরিয়ার সার্কেল অফিসার দয়ারাম সিং গৌরকেও পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দেওরিয়া থানার ইনস্পেক্টরকেও কর্তব্যে গাফিলতির জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ডিজিপি ওপি সিং, গোরখপুর জোনের এডিজিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত ১১ অগাস্ট সেই তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে ডিজিপির দফতর থেকে গতকাল এই সুপারিশগুলি করা হয়েছিল।
সেই সুপারিশের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন সরকারি মুখপাত্র।
দুর্নীতি দমন শাখার ডিআইজি আশুতোষ কুমারকে বাস্তির নতুন ডিআইজি নিয়োগ করা হয়েছে। মাহোবার পুলিশ সুপার এন কাঞ্চিকে দেওরিয়ায় পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসদমন শাখার এস পি কুঁয়ার অনুপম সিংকে মাহোবায় বদলি করা হয়েছে।
ওই হোম থেকে পালিয়ে আসা একটি মেয়ের দৌলতে সেখানকার কর্মকাণ্ড প্রথম জানাজানি হয়। সেই মেয়েটি পালিয়ে থানায় এসে অন্য আবাসিকদের অবস্থা জানায়।
মেয়েটির বয়ান অনুযায়ী, "সাদা, কালো, লাল গাড়ি এসে মেয়েদের নিয়ে যেত। সকালে ফেরার পরে ওরা কাঁদত।"
অগাস্টের ৮ তারিখে এলাহাবাদ হাইকোর্ট স্থির করে আদালত এ ঘটনার তদন্তের দেখভাল করবে। আদালতের বক্তব্য, মা বিন্ধ্যবাসিনী নামের ওই হোমের মালিক বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার দাক্ষিণ্য উপভোগ করতেন, যার ফলে ব্ল্যাক লিস্টেড হওয়া সত্ত্বেও হোমটি চালিয়ে যেতে পারছিলেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে সুয়ো মোটো মামলা করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি ডিবি ভোসলে এবং বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা এই নির্দেশ দেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ওই হোমে ক্রমাগত মেয়েদের নিয়ে আসা হত এবং জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও হোমের ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।