২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে শিখ ধর্মগ্রন্থ গ্রন্থ সাহিবের অবমাননার অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল। গুলি চালানো হয়েছিল বিক্ষোভকারীদের ইপর। ধর্মগ্রন্থ অপবিত্র করার দায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন কিছু মানুষ। এ ঘটনার জেরে বুধবার অক্ষয়কুমারের বিবৃতি রেকর্ড করা হল চণ্ডীগড়ে, পাঞ্জাব পুলিশের সদর দফতরে।
এদিন চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে পৌঁছনোর আধঘণ্টা পরই সোজা পাঞ্জাব পুলিশের বিশেষ তদন্ত দলের সামনে হাজির হয়ে যান অক্ষয় কুমার। পাঞ্জাব পুলিশের আইজি ও বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য কানওয়ার বিজয় প্রতাপ সিং জানান, প্রথমে দুপুর ২.৩০ টে নাগাদ অভিনেতাকে হাজির হতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, ''অক্ষয় কুমারের তরফে জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব তাড়াতাড়ি সেরে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। আমরা তাঁকে জানিয়েছিলাম সিট সকাল ১০টা নাগাদ পুলিশ হেডকোয়াটারে পৌঁছবে''।
তাঁর সঙ্গে সাদামাটা কথোপকথন হয়েছে বলেই বিশেষ তদন্তকারী দলের এক সদস্য জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সিট সদস্য বলেছেন, ‘‘অক্ষয়কুমার নিজেই মামলা তদন্তের অগ্রগতির খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে আগ্রহী ছিলেন।’’
একটি সূত্র জানিয়েছে, বেশ কিছু দায়িত্বশীল পুলিশ আধিতারিকরা অক্ষয়েক সঙ্গে ফোটো তােলার ব্যাপারে উৎসুক ছিলেন এবং কয়েকজন অক্ষয়ের জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন প্রায় আধঘন্টা অপেক্ষাও করেছিলেন। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের অবশ্য সে সৌভাগ্য হয়নি। অক্ষয়কুমারের জেরা যেখানে চলছিল সে জায়গাটিকে সংরক্ষিত করে রাখা ছিল। কউ কেউ অবশ্য মার্সিডিজে আক্কির বসে থাকা অবস্থাতেই সেলফি তুলে নিয়েছেন।
অক্ষয় কুমারকে জেরা করা হয়েছে টাকা পয়সার ব্যাপারে মধ্যস্থতার একটি বৈঠকে উপস্থিত থাকাকে কেন্দ্র করে, জানাচ্ছে একটি সূত্র। অভিযোগ ওই বৈঠকে শিরোমণি অকালি দলের প্রেসিডেন্ট সুখবীর সিং বাদল তো ছিলেনই, অন্যপক্ষে হয় ছিলেন ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিম অথবা তাঁর কোনও প্রতিনিধি। বেঠকে ডেরা প্রধানকে অকাল তখতের তরফ থেকে মাফ করে দেওয়া এবং ডেরার ছবি এমএসজি ২ কে পাঞ্জাবে মুক্তি পাওয়ানোর বিষয়ে কথা হয়েছিল বলে জানিয়েছে সূত্র।
আরও পড়ুন, ধর্ষণে অভিযুক্ত অলোক নাথের নামে এফআইআর!
সুখবীর সিং বাদলকে এ ব্যাপারে গত ১৬ নভেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, এ ধরনের কোনও ডিল বা বৈঠকের কথা তিনি অস্বীকার করেন। এদিনের জিজ্ঞাসাবাদে সে কথা একই ভাবে অস্বীকার করেছেন অক্ষয় কুমারও।
এ মামলায় তদন্তকারী অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত সিংয়ের বেঞ্চের সামনে সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে এ ধরনের ডিলের উল্লেখ করেন এক সাক্ষী।
ঘটনাপ্রবাহ যেরকম ছিল-
শিখ গুরু দশম গোবিন্দ সিংকে নকল করার অভিযোগে অভিযুক্ত ডেরা সাচ্চা সৌদাকে ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর বিতর্কিত ভাবে ক্ষমা করে দেয় অকাল তখত।
এর পরের দিনই পাঞ্জাব জুড়ে মুক্তি পায় মেসেঞ্জার এফ গড ২।
মুক্তির এক সপ্তাহ পরে অপবিত্রতার অভিযোগ তুলে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে বিভিন্ন জায়াগায় এবং ২০১৫ সালের ১২ অক্টোর বাগারিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়।
কোটকপুরা এবং বেহবল কালান এলাকায় ১৪ অক্টোবর ২০১৫ সালে এরকম বিক্ষোভে গুলি চালায় পুলিশ। বেহবল কালানে পুলিশি গুলি চালনায় দু জনের মৃত্যু হয়।
এই গোটা ঘটনাপ্রবাহে ইন্ধন দিয়েছিল অক্ষয় কুমারের ভূমিকা, এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে জেরা করে সিট।
Read the full story in English