ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) দ্বারা জারি করা নতুন পরীক্ষার নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও, দিল্লির বেশ কয়েকটি হাসপাতাল এখনও রোগী ভর্তির সময় এবং হাসপাতালে সংক্রমণ রোধ করার জন্য ভর্তির আগে রোগীদের করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে। চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন যে সক্রিয় সংক্রমণের রোগীদের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের ফলাফল আরও খারাপ হতে পারে। একেই ওমিক্রন পরিস্থিতিতে একের পর এক ডাক্তার নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী যেভাবে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাই তারা আর কোন রকম ঝুঁকি নিয়ে রাজী নয়, বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক মহল।
আইসিএমআরের নয়া নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে? সেখানে বলা আছে, উপসর্গহীন রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির আগে অথবা অস্ত্রপ্রচারের আগে, অথবা যেসকল গর্ভবতী মহিলা, হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, তাদের ডেলিভারির আগে, কোন উপসর্গ না থাকলে করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। নয়া এই নির্দেশিকা জারীর পর থেকে দিল্লি দহ দেশের নানা প্রান্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এপ্রসঙ্গে দিল্লির এক সিনিয়র চিকিৎসক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ‘নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার পরে সরকারের নমুনা সংগ্রহ দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে’।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে (AIIMS) একজন সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, নির্দেশ এসেছে আমাদের সকলকে তা মেনে কাজ করতে হবে। এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে দিল্লির একটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘রোগী ভর্তির আগে আমদের হাসপাতালের তরফ থেকে তার কোভিড টেস্ট করিয়ে নেওয়া হছে। একজন যদি ওয়ার্ডে পজিটিভ থাকেন তাহলে ওয়ার্ডে ভর্তি অন্য সকলেও কোভিডে আক্রান্ত হবেন। সেই সঙ্গে অস্ত্রপ্রচারের আগেও রোগীদের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। না করালে যে মেডিক্যাল টিম তার অস্ত্রপ্রচার করছেন, তাদের সকলেই কোভিডে আক্রান্ত হতে পারেন তাই আমরা ঝুঁকি নিতে পারিনা’।
সফদরজং হাসপাতালের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ভর্তির সময় রোগীদের দ্রুত অ্যান্টিজেন কিট ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাদের পরীক্ষা পজিটিভ হলে সুপার স্পেশালিটি ব্লকের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে, রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই তাদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, এমনিতেই একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার নানান রকম শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয়ে থাকে, তার সঙ্গে কেবল করোনা পরীক্ষা অ্যাড হলে সেরকম কোন ক্ষতি হবে না বরং, হাসপাতালটি সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ সুমিত রায় বলেন, ওমিক্রনের দাপটের একেবারে প্রথম দিকে আমাদের ৩৮০ জন নার্সের মধ্যে ৭১ জন কোভিড পজিটিভ হয়েছিলেন, ফলে আমাদের পরিষেবা চালু রাখতে রীতিমত সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। শহরের একটি বিশিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের আরেক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, “আমরাও রোগীদের পরিবারের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। হাসপাতালে ভর্তির পর কোন রোগী করোনা পজিটিভ হলে হাসপাতাল তার দায় এড়াতে পারেনা। তাই আমাদের করোনা পরীক্ষা চালিয়ে যেতেই হবে”!