আটক কেন্দ্র নেই। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করেই অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরতে পথে নেমেছে বেঙ্গালুরুর প্রশাসন। এই সংক্রান্ত কর্নাটক হাইকোর্টের রায়ের আগেই প্রশাসনের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর আগে রাজ্য সরকারকে বিষয়টির রেকর্ড রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি কে এন ফণীন্দ্র। ২০১৮ সালের আগস্টে বেঙ্গালুরুতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই বাংলাদেশির দায়ের করা জামিনের আবেদনের ভিত্তিতে সেই রায় দেওয়া হয়েছিল।
কর্নাটকে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তর্জা অব্যাহত। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন কর্নাটকে সদ্যই এনআরসি লাগু হবে। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন অবৈধ বাংলাদেশিরা অবিলম্বে শহর থেকে না সরলে পরিণতি হবে ভয়ঙ্কর। আটকে রাখা হবে তাদের।
আরও পড়ুন: এনআরসি আজকের নথি নয়, ভবিষ্যতের ভিত্তি: রঞ্জন গগৈ
গত অক্টোবরে বেঙ্গালুরুর দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে থেকে ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা বেশিরভাগই লোকের বাড়িতে কাজ করে বা রাস্তায় জঞ্জাল তোলার কাজ করে থাকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ফরেন অ্য়াক্টে দুটি মামলা ধৃতদের বিরুদ্ধে করা হয়। ধৃতদের মধ্যে ২৪ জন মহিলা ও ১৬ জন শিশু রয়েছে। কার্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোম্মাই বললেন, 'বেঙ্গালুরু সহ কর্নাটকের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ বাংলাদেশি রয়েছে। তাদের সরাতেই আসামের মতো এরাজ্যেও এনআরসি লাগু করা হবে। কেন্দ্রের সঙ্গে এনিয়ে কথা এগোচ্ছি।'
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় এনআরসি করা হবে না’, আবারও সরব মমতা
আদালতে ইয়েদুরাপ্পা সরকার জানিয়েছে, অক্টোবরে ধরা পড়া ৬০ জন বাংলাদেশি ছাড়া ৩৭৩ জনের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে ১২৭ জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফরেন রিজিওনাল অফিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অবৈধ বাংলাদেশির ধরপাকড়ের পর নির্বাসন নিশ্চিত করার বিষয়টি কর্নাটক সরকারকেই দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক 'দেশ ছাড়ার' নোটিশও ইস্যু করবে বলে জানা গিয়েছে। তবে, বেঙ্গালুরুতে এখনও আটক কেন্দ্র তৈরি হয়নি। ফলে পুলিশের জেলে পুরুষদের রাখা হয়েছে। হোমে রাখা হচ্ছে মহিলাদের। রাজ্যের এক আমলার কথায়, 'এখনও পর্যন্ত আটক কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সমাজ উন্নয়ন দফতরের হোস্টেলকেই ডিটেনশন সেন্টার করা হচ্ছে।'
আটক কেন্দ্রে কাদের রাখা হবে। নিয়ম অনুসারে অবৈধ নাগরিকদের সেখানে রাখা হয় না। নাগরিত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হলে তবেই তাদের আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে অবৈধ বাংলাদেশিদের ধরে আটক কেন্দ্রে রাখার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
Read the full story in English