চিন-বাংলাদেশ মৈত্রী ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তিস্তা নদী সংস্কারের জন্য বেজিংয়ের থেকে এক বিলিয়ান মার্কিন ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ঢাকা। এই আবহেই দু'দিনের বাংলাদশ সফরে ঢাকায় রয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শ্রিংলা। উভয় দেশের স্বার্থ সম্পর্কিত নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় দু'জনের।
সূত্রের খবর, হাসিনা-শ্রিংলা বৈঠক হয়েছে 'অভূতপূর্ব'। কোভিড মহামারীর মধ্যেও হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে দূত হিসাবে বাংলাদেশে পাঠানোয় আপ্লুত হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এই পদক্ষেপ দু'দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহযোগিতার যৌথ প্রয়াসের নানা প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে খবর। এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই দুই দেশের পরামর্শদাতা কমিশন বৈঠক করবে বলে জানা গিয়েছে। প্রতিবেশী উভয় রাষ্ট্রই তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, কোভিড পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, মহামারী মোকাবিলা ও চিকিৎসাবিজ্ঞান-ভ্যাকসিন সহযোগিতা ও মুজিবুর রহমান যৌথ স্মৃতিরক্ষা সম্পর্কিত ইস্যুতে আলোচনা করেছে।
এই বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মায়ানমারে ফেরানোর বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
গত ৯ বছর ধরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তা জলবন্টন চুক্তি আটকে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুক্তিতে সাক্ষর করতে অস্বীকার করেছেন। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে বাংলাদের জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী জানান, তিস্তা নদী সংস্কারে চিনের থেকে ঋণের বিষয়টি নিশ্চিত করা গিয়েছে।
তিস্তার সংস্কার প্রকল্পের জন্য ৯৮৩.২৭ মিলিয়ান মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। প্রতি বছর বর্ষায় তিস্তার জলে বন্যা হয়। আবার শীতে জল সংকট দেখা দেয়। ফলে এই নদীর সংস্কার খুবই জরুরি। বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে যা উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে যে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম তিস্তা। এই নদীর উৎস ভারতে। দীর্ঘ ৩১৫ কিমির মধ্যে ১১৩ কিমি বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও এনআরসি-কে ঘিরে ভারত-সম্পর্ক কিছুটা শ্লথ হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের পর পরই বাংলাদেশের মন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করেন। পরে মার্চ মাসে বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকায় গিয়ে সে দেশের উৎকণ্ঠার নিরসণ করেন।
এর মধ্যেই অবশ্য বাংলাদেশকে ১০টি ব্রড গেজ রেল ইঞ্জিন দিয়েছে নয়াদিল্লি। মঙ্গলবার এ জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুনল্গো