সুপ্রিম কোর্ট বরাবর নারীদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। সোমবার অন্তঃসত্ত্বা এক নাবালিকার গর্ভপাতের আর্জির শুনানিতে একথা বললেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। এদিন তাঁর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। শরদ অরবিন্দ বোবডের দাবি, ‘কোর্ট বরাবর মহিলাদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করে এসেছে। নারীর অবমাননার কথা এই বেঞ্চ ভাবতেই পারে না।‘ সম্প্রতি ধর্ষণ সংক্রান্ত এক আগাম জামিন মামলায় অভিযুক্তের সামনে নিগৃহীতাকে বিয়ের প্রস্তাব রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলার শুনানি হয়েছিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চেই।
সেই প্রস্তাব নিয়ে হুলুস্থুলু পড়ে যায় দেশে। সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে এমন অসংবেদনশীল নিদান দিতে পারে? প্রশ্ন তোলেন সমাজকর্মীরা। সেই সমালোচনার জবাবে এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কোনও নিদান দেননি। শুধু প্রশ্ন করেছিলেন।‘ ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ধর্ষিত কিশোরীকে তিনি বিয়ে করবে কি না? কিন্তু বিয়ে করতে বলেননি। অথচ তাঁর বক্তব্যের অপব্যখ্যা করা হয়েছে।‘ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। এমনটাই বলছেন সমাজবিদরা।
দেশ জুড়ে নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা তীব্র সমালোচনা করেছে বোবদের। গত ১ মার্চের ধর্ষণ মামলায় বিতর্কিত সেই রায়ের পর ‘খলনায়ক’ প্রতিপন্ন করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতেও বলা হয় বোবদেকে। সোমবার নিজের বক্তব্যের ব্যখ্যা দিলেন প্রধান বিচারপতি। বোবদে বললেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতকে এমনভাবে প্রকাশ করা হয়েছে যাতে মনে হয়, মহিলাদের অসম্মান করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অথচ এটা একেবারেই ঠিক নয়।‘
ধর্ষণের মতো অপরাধকে ‘লঘু’ করার চেষ্টা করেছে সুপ্রিম কোর্ট, এমনই অভিযোগ উঠেছিল দেশের প্রধান বিচারপতি বোবদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার, ১ মার্চ, একটি ধর্ষণ মামলার রায় নিয়ে এই বিতর্কের সূত্রপাত। ওই মামলায় ধর্ষণে অভিযুক্ত মোহিত সুভাষ চহ্বানের জামিনের আবেদনের শুনানি চলছিল আদালতে। মহারাষ্ট্রের সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার কর্মী মোহিতের বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। পকসো আইনে অভিযুক্ত মোহিতের বিরুদ্ধে ওই মামলার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্ট
ওই প্রস্তাব দিয়েছিল।
আদালত বলেছিল, ‘আপনি কী নিগৃহীতাকে বিয়ে করবেন? তাহলে আপনার আগাম জামিন বিষয়ে আমরা বিবেচনা করতে পারি। যদিও আপনাকে কেউ জোর করছে না।‘ এই প্রস্তাবের জবাবে আবেদনকারীর আইনজীবী বলেছেন, ‘আমার মক্কেল বিবাহিত। উনি প্রথমেই নিগৃহীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু ও সেই প্রস্তাব খারিজ করে।‘