তৃতীয় দফার ভোট আবহে কোচবিহার রাসমেলার মাঠে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উত্তরবঙ্গ ভোট প্রচারে সক্রিয় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহারের পাশাপাশি হাওড়ার ডুমুরজলা মাঠে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ১০ এপ্রিল চতুর্থ দফায় কোচবিহারের ৯টি কেন্দ্রে ভোট। হাওড়ার ১৬টির কেন্দ্রের মধ্যে ৭টিতে ভোট হচ্ছে মঙ্গলবারই, বাকি ৯টি আসনে ভোট হবে চতুর্থ দফায়। তার আগে ৬ এপ্রিল ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবসে কোচবিহার এবং হাওড়ায় প্রচার শুরু মোদীর। এর আগে রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোটের দিনও জোড়া সভা করেছিলেন। প্রথম দফার ভোটের দিন ছিলেন বাংলাদেশে। এদিন মোদী বলেছেন, ‘আজ বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবসে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মভূমি বাংলায় আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।’ এদিন তাঁর গলায় মেরুকরণের সুরও শোনা গিয়েছে।
কী বললেন তিনি--
বিজেপি সরকার এলে জলের সমস্যা মেটানো হবে। প্রতি বাড়িতে পাইপলাইনে জল যাবে। আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি হবে। কোল্ড স্টোরেজের সুবিধা পাবেন চাষীরা
মিথ্যার খেলা শেষ করতে চলো পাল্টাই, কাটমানির খেলাকে দাও বিদায়, তৃণমূলকে দাও বিদায়, চলো পাল্টাই চলো পাল্টাই
দিদি রাজ্যে দিনের পর দিন মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন, মহিলাদের সুরক্ষা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাজ্যে গুণ্ডারাজ বে়ড়েছে
ফড়েদের অত্যাচার চলেছে, কৃষকরা, চা বাগানের কর্মীরা শোষিত হয়েছেন, সিন্ডিকেটের ক্ষমতা বেড়েছে অথচ দিদি সব মুখ বুজে দেখেছেন
আপনি নতুন কর ব্যবস্থা চালু করেছেন। ভাইপো সার্ভিস ট্যাক্স। আপনার ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড জানা গিয়েছে অডিও টেপে : মোদী
দিদি আপনি ভোটের ময়দানে নিজের পোস্টেই গোল করেছেন
বাংলা জুড়ে আওয়াজ উঠেছে চলো পাল্টাই। তৃণমূলকে বিদায় দিয়ে চলো পাল্টাই
আপনার আচরণ দেখে একজন শিশুও বলে দেবে ২ মে আপনার সরকার বিদায় নিচ্ছে। এখন ইভিএমও আপনার কাছে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে
একসময় এই ইভিএমের পক্ষে কথা বলতেন আপনিই। একসময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাতেন আপনিই। আপনার মুখে এখন অন্য কথা কেন?
এ থেকেই বোঝা যায় দিদির খেলা শেষ। আপনি জনসভায় যা যা বলছেন, তা বললে আমাকেও এতদিনে নির্বাচন কমিশনের নোটিস পেতে হত।
সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় বিভাগ ভরে যেত সমালোচনায়। আপনি বলছেন মুসলিমরা একজোট হয়ে ভোট দাও। আমি যদি বলতাম হিন্দুরা জোট বেধে বিজেপিকে ভোট দাও, কেমন হত ভাবুন তো?
আপনাকে বারবার বলতে হচ্ছে আপনিই নন্দীগ্রামে জিতছেন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে আপনি ভোটে হারছেন
যেদিন আপনার পার্টি লিখেছিল, দিদি এবার বেনারস থেকে ভোটে দাঁড়াবেন। সেদিনই গোটা দেশবাসী বুঝে গিয়েছেন, আপনি আর বাংলায় নেই
বাংলার বাইরে আপনাকে ভোটে লড়তে হচ্ছে। এর জন্য কারও ভগবান হওয়ার দরকার নেই
নন্দীগ্রামের পোলিং বুথে আপনি যা করেছেন, তা দেখেই বোঝা গিয়েছে ভোটে আপনি হেরে গেছেন
২ মে-র পর যখন দেশে বিজেপি সরকার আসবে তখন মানুষের ভালবাসা সুদ সমেত ফেরাব আমরা। উন্নয়নে প্রতিদান দেব
দিদি প্রশ্ন করছেন, বিজেপি কি ভগবান যে ওরা বুঝতে পেরেছে প্রথম দুই দফায় বিজেপি বেশি ভোট পেয়েছে!
আদরনীয় দিদি আমরা ভগবান নয়। সাধারণ মানুষ। মানুষকে ধন্যবাদ। তাঁদের আশীর্বাদ আর ভালবাসাই আমাদের শক্তি।
এর জন্য ভগবানকে কষ্ট দিচ্ছেন কেন! জনতাই জনার্দন। তাদের দেখেই বোঝা যায় রাজ্যের হাওয়া কোন দিকে
২ মে দিদির বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। গত দু’ দফার ভোটে প্রচুর মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আজও তাই হচ্ছে।
বাংলার ভোটে বিজেপির এমন ঢেউ উঠেছে, যে সেই ঢেউ তৃণমূল আর দিদির গুণ্ডা বাহিনীকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে
এখানে আসতে আমার দেরি হয়েছে কেন জানেন? কারণ এখানে আসার আগে রাস্তার দু’পাশে মানুষের রীতিমতো মানব প্রাচীর তৈরি করে দাঁড়িয়েছিলেন
তাঁরা আমাকে আশীর্বাদ করেছেন : মোাদী