বিশ্বজুড়ে দাপট দেখাচ্ছে করোনার নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন। ভারতেও বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে ভারতে ইতিমধ্যেই করোনা তৃতীয় ঢেউ উঠতে শুরু করেছে। তবে আগের দুটি ঢেউ থেকে একে বারেই আলাদা নতুন এই ঢেউ। তা এককথায় মেনে নিচ্ছে চিকিৎসক থেকে আক্রান্ত সকলেই। একনজরে দেখে নেওয়া যাক প্রথম দুটি ঢেউ থেকে কতটা আলাদা করোনার এই নয়া স্ট্রেন।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাদ এবং গন্ধ থাকত না। অন্তত প্রথম সাত দিন তো একেবারে নয়। শুকনো কাশি থাকত। তবে ঠান্ডা লাগা দীর্ঘস্থায়ী হত না। আক্রান্ত ব্যক্তির বুকে সিটি স্ক্যানের পর কোভিড জেলির উপস্থিতি পাওয়া যেত। শরীরের তাপমাত্রা বেশ উঁচুর দিকেই থাকত। আক্রান্ত ব্যক্তির দুর্বলতা থাকত মারাত্মক। যাঁদের কো-মর্বিডিটি ছিল তাঁদের সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিত। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাটা ছিল ১০ শতাংশ। প্রাণহানির সংখ্যাও ছিল চোখে পরার মত।
দ্বিতীয় ঢেউ কালে আমরা দেখে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাদ বা গন্ধ কখনও সম্পূর্ণ চলে যেত কখনও বা আংশিক। তবে ঠান্ডা লাগা বেশিদিন স্থায়ী হত না। এক্ষেত্রেও বুকে কোভিড জেলির উপস্থিতি পাওয়া যেত। এই পর্যায়ে জ্বর থাকত অনেকদিন। এবং প্রায় সকল রোগীদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা যেত। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা প্রায় ১২ শতাংশ।
অন্যদিকে ওমিক্রন ভাইরাসের হানায় সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়ালেও, স্বাদ অথবা গন্ধ চলে যাওয়ার মত উপসর্গ একেবারেই থাকছে না। গায়ের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়ছে না। আক্রান্ত ব্যক্তির বুকে কোনও কোভিড জেলির উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে না। ওমিক্রন আক্রান্তদের কিছু জনের মধ্যে বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, গলা ব্যাথা এবং মাথার যন্ত্রণার মতো উপসর্গও দেখা গিয়েছে। তুলনামূলক-ভাবে হাসপাতালে ভর্তির প্রবণতাও অনেক কম।
তবে ইতিমধ্যেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতার জন্য ওমিক্রনের আক্রমণ ক্ষমতা আগের দুই ঢেউয়ের থেকে অনেক কম। সাধারণ ভাবে ভাইরাসের চরিত্র এবং সার্বিক টিকাদান এই দুইয়ের ওপর ভর করা ভারত তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। অনেক বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে সম্ভবত ২০২২ সালেই করোনা ভাইরাসের শেষের শুরু হতে চলেছে।