/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2019/09/javdekar1.jpg)
প্রকাশ জাভড়েকর। ফাইল ছবি
কিছুদিন আগেই ভারতের অর্থনীতিতে "সামগ্রিক অব্যবস্থার" অভিযোগ তুলে বর্তমান মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডাঃ মনমোহন সিং। আজ, মঙ্গলবার কেন্দ্রের তরফে বার্তা এলো, মনমোহনের বিশ্লেষণের সঙ্গে একমত নয় সরকার, যেহেতু তাঁর সরকারের শাসনকালে পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতির তালিকায় ১১ নম্বরে ছিল ভারত, এবং আজ রয়েছে পাঁচ নম্বরে।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে মনমোহনের বক্তব্য সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, "আমরা মনমোহন সিংয়ের বিশ্লেষণের সঙ্গে সহমত নই...পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতির তালিকায় ১১ নম্বরে ছিল ভারত। এখন রয়েছে পাঁচ নম্বরে, এবং আমরা এগিয়ে চলেছি তিন নম্বর হওয়ার লক্ষ্যে।"
জাভড়েকর আরও বলেন, "আমরা যেটা করছি, তা হলো সরকার হিসেবে আরও প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ার চেষ্টা, এবং সমস্যার সমাধান খোঁজা। এই একই জিনিস আমরা জিএসটি-র সময়েও দেখেছিলাম। প্রতি মাসে বৈঠকে বসত জিএসটি কাউন্সিল, যেখানে প্রাসঙ্গিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, এবং এখন প্রক্রিয়াটা মসৃণ হয়ে গেছে। এভাবেই কাজ করা উচিত জনদরদী সরকারের, এভাবেই আমরাও কাজ করছি।"
ভারতের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থায় হতাশা প্রকাশ করে একটি ভিডিওতে মনমোহন বলেন, "আজকে অর্থনীতির যা অবস্থা, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত সিকিবর্ষে (কোয়ার্টার) জিডিপি বেড়েছে পাঁচ শতাংশ, যা থেকে বোঝা যায় যে আমরা এক দীর্ঘস্থায়ী মন্দার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ভারতের ক্ষমতা রয়েছে এর চেয়ে অনেক দ্রুত উন্নতি করার, কিন্তু মোদী সরকারের সামগ্রিক অব্যবস্থার ফলেই এসেছে এই মন্দা।"
শুক্রবার ন্যাশনাল স্ট্যাস্টিক্যাল অফিস (এনএসও) দ্বারা প্রকাশিত পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম সিকিবর্ষে (এপ্রিল-জুন) দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বেড়েছে পাঁচ শতাংশ, যা গত ২৫ টি সিকিবর্ষে সর্বনিম্ন। কারখানাজাত উৎপাদন এবং কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার তীব্রভাবে হ্রাস পাওয়া ছাড়াও এই মন্দার মূলে রয়েছে ব্যক্তিগত খরচে স্রেফ ৩.১ শতাংশ বৃদ্ধি, যা কিনা গত ১৮ টি সিকিবর্ষে সর্বনিম্ন।
"ডিমনেটাইজেশন (নোট বাতিল) এবং জিএসটি-র মতো মনুষ্যসৃষ্ট সাংঘাতিক ভুলের আঘাত এখনও কাটিয়ে উঠতে পারে নি আমাদের অর্থনীতি। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে স্থিরমস্তিষ্কের পরামর্শ নিন, যাতে আমাদের অর্থনীতিকে এই বিপদ থেকে বের করে আনা যায়," বলেছিলেন মনমোহন।
অগাস্ট মাসে অর্থনীতিতে মন্দা কাটানোর জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপের প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এই তালিকায় ছিল ৭০ হাজার কোটি টাকার 'রিক্যাপিটালাইজেশন প্ল্যান' এবং অনেকগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণ, যাতে অর্থনীতিকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।