জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজি হেমন্ত কুমার লোহিয়া হত্যা মামলায় বড়সড় সাফল্য পেল কাশ্মীর পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে নিহত পুলিশ কর্তার পরিচারককে। ডিজি হত্যার পর থেকেই ইয়াসির আহমেদ পলাতক ছিলেন। আজ তাকে আটক করে কাশ্মীর পুলিশ। অভিযুক্ত পরিচারক ইয়াসিরকে খুঁজতে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ রাতভর তল্লাশি অভিযান চালায়। জম্মুর কানাচক এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন বলেই জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করা হয়। লোহিয়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং ইয়াসির কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাও জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তিনি কি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের নির্দেশে এ কাজ করেছেন? সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
উপত্যকায় ফের নৃশংস খুন। সোমবার গভীর রাতে জম্মু শহরের কাছে উদাইওয়ালায় বাড়ি থেকে গলার নলি কাটা অবস্থায় শীর্ষ কারা আধিকারিকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় জম্মু কাশ্মীর পুলিশের ডিজি (কারা) হেমন্ত কুমার লোহিয়ার নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে। উপত্যকার এই শীর্ষ পুলিশকর্তাকে খুন করা হয়েছে বলেই একপ্রকার নিশ্চিত পুলিশ। এই ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছিল না নিহতের পরিচারকের। পলাতক ওই ব্যক্তিই শীর্ষ পুলিশকর্তা খুনে মূল অভিযুক্ত বলে ধারণা পুলিশের। খুনের পর থেকে ইয়াসির খোঁজে রাতভর তল্লাশি চালায় কাশ্মীর পুলিশ। অবশেষে পুলিশের জালে আটক ডিজি খুনের মূল অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: < ভারতের আকাশপথে বোমাতঙ্ক! ইরানি বিমানের জন্য উড়ে গেল বায়ুসেনার ফাইটার জেট >
৫৭ বছর বয়সী হেমন্ত কুমার লোহিয়া ১৯৯২ ব্যাচের আইপিএস অফিসার ছিলেন। সোমবার রাতে জম্মুর কাছে উদাইওয়ালার একটি বাড়িতে তাঁকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। জম্মু কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের অগস্টে তাঁকে ডিজিপি (কারা) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এডিজিপি বলেন, ”প্রাথমিকভাবে এটিকে খুন বলেই মনে হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে এই পুলিশ আধিকারিকের বাড়িতে যে ব্যক্তি কাজ করত তার খোঁজ নেই। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে, জম্মু কাশ্মীর পুলিশের এই শীর্ষ কর্তাকে এমন নৃশংসভাবে খুন নিয়ে জোরদার চর্চা শুরু পুলিশ মহলে। এই ঘটনার পিছনে অনেকে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের হাত দেখছে। অনেকে বলছেন, স্থানীয় সহযোগীদের কাজে লাগিয়ে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন। যদিও জম্মু কাশ্মীর পুলিশের তরফে এখনও এব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে, যাতে ইয়াসিরকে হত্যার পর বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও, পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বাড়ি থেকে অভিযুক্তের একটি ডায়েরিো বাজেয়াপ্ত করেছে। যাতে সে তার জীবনের প্রতি তার হতাশা প্রকাশ করেছে। সোমবার গভীর রাতে জম্মুর উপকণ্ঠে নিজের বাসভবনে খুন হন লোহিয়া। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তিনদিনের জম্মু ও কাশ্মীরে সফরে রয়েছেন। তার সফরকালের মাঝেই এই ঘটনায় স্তম্ভিত কাশ্মীর প্রশাসন। পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন বছর ২৩-এর ইয়াসিরকে ধরতে বেশ কয়েকটি দল গঠন করা হয়েছে। অবশেষে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ কর্তা খুনে মূল অভিযুক্তের নাগাল পায় পুলিশ। অভিযুক্ত যুবক রামবান জেলার হাল্লা-ধান্দ্রথ গ্রামের বাসিন্দা।